রাজ্য

স্কুল দপ্তরের খামখেয়ালীপনা নির্দেশিকায় বিপাকে স্কুল শিক্ষকরা :::—–


রত্না দাস: চিন্তন নিউজ:১লা সেপ্টেম্বর,২০২০:- আগস্ট মাসে স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল দিতে গিয়ে হাজারো রকম সমস্যার সম্মুখীন হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।শিক্ষা দপ্তরের বারবার মিড-ডে মিল সংক্রান্ত নির্দেশাবলী পরিবর্তনকেই দায়ী করেছেন অনেকে। দপ্তরের আধিকারিকদের খামখেয়ালিপনায় রীতিমতো অসন্তুষ্ট অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। এই নিয়ে অধিকাংশ অভিভাবকরাও খুবই অসন্তুষ্ট। বারবার নির্দেশ পাল্টানোয় লকডাউনে মিড ডে মিলের খাদ্যদ্রব্য স্কুলে নিতে এসে অভিভাবক ও স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে মনোমালিন্য ও ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যা দেখা গিয়েছে আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন স্কুলে।

এলাকার একাধিক স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে আগস্ট মাসের মিড-ডে মিলের জন্য জুলাই এর মাঝামাঝি সময়ে নির্দেশিকা আসে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে পড়ুয়াদের মাথাপিছু দু’ কেজি চাল, এক কেজি আলু ও আড়াইশো গ্রাম করে মুসুর ডাল ও সোয়াবিন দেওয়া হবে। কিন্তু কয়েকদিন পর এই নির্দেশিকা বদলে যায়। তাতে বলা হয়েছে চাল আলুর সাথে এক কেজি করে ছোলা দেওয়া হবে। আর সেই ছোলা দেবে স্থানীয় রেশন ডিলার’রা। জুলাইয়ে একদম শেষ দিকে আবার নতুন নির্দেশিকা আসে। তাতে বলা হয় যে এই ছোলা দেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই ছোলা স্কুলগুলোকে খোলাবাজার থেকে কিনে দিতে হবে। আর এই নির্দেশিকাতে চরম সমস্যায় পড়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকারা।

দ্বিতীয়বারের নির্দেশমতো বেশিরভাগ স্কুল স্থানীয় রেশন ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত করে ফেলেন। এরপর তৃতীয় বারের নির্দেশিকা আসায় প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকা পড়েন মহাফাঁপরে। কারণ রেশন ডিলারদের সঙ্গে চুক্তি করার পর ফের সেই চুক্তি বাতিল করতে হয় তাদের । এতে উভয়ের মধ্যেই নিদারুণ ভুল বোঝাবুঝি ও মনকষাকষি হয়। অনেক রেশন ডিলার রাগারাগিও করেন।

এরপর খোলাবাজারে ছোলা কিনতে গিয়েও অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের। প্রথমত ছোলা পাওয়া যাচ্ছে না, দ্বিতীয়তঃ সরকারি নির্ধারিত দামে সেই ছোলা দিতে কেউই রাজি নয়। তৃতীয়তঃ খোলাবাজারে ছোলার ঘাটতি হওয়ায় তা কালোবাজারি শুরু হয়ে গেছে। যদিও বা কোথাও ছোলা পাওয়া যাচ্ছে কিন্তু তা অত্যন্ত নিম্নমানের। অভিভাবকরা এতে খুবই অসন্তুষ্ট তারা মনে করছেন এই সবই স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি। এই নিয়ে শিক্ষকদের সাথে অভিভাবকদের বচসাও হয়েছে।

শুধুমাত্র শিক্ষা দপ্তরের খামখেয়ালীপনার জন্যই এমন হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু শিক্ষক বলেন, “এসবই সরকারের তুঘলকি কাণ্ড কারখানার ফলে সকলের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। আগস্ট মাসে কি মিড-ডে মিল হবে তা নিয়ে বারবার নির্দেশিকা বদল। রেশন ডিলারদের কাছ থেকে ছোলা নেওয়ার কথা হলেও ফের পরিবর্তন করা হয়। এবার খোলাবাজার থেকে ছোলা কিনতে অর্ডার দেওয়া হল। কিন্তু সরকারি রেট৬০/৬৫ টাকা। কেউই ওই দামে ছোলা দিতে রাজি হচ্ছে না।খোলা বাজারে পাওয়া গেলেও তা অত্যন্ত নিম্নমানের। এতে অভিভাবকদের মনে আমাদের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।”

এ প্রসঙ্গে হুগলি জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তা সত্ত্বেও আমি ব্লক পর্যায়ে অফিসারদের কাছে খোঁজ নিয়ে দেখছি এই সমস্যার সমাধান করা যায় কিনা। ‘


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।