.
নিজস্ব প্রতিবেদন:দেবু রায়: চিন্তন নিউজ:৯/২/২০২২—তৃনমূল সরকার বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে, তাঁদের শাসনে অনেক মানুষই আস্তে -আস্তে ক্ষুব্ধ হচ্ছে।দীর্ঘ দিন ধরেই কোনো কর্মসংস্থান নেই রাজ্যে।ছেলে মেয়েরা বাধ্য হচ্ছে বাইরে যেতে পেটের তাগিদে, বুড়ো বাবা -মাকে ফেলে।
অন্য দিকে দান -খয়রাতি করে নানান প্রলোভন দেখিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না । বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এলেও সেগুলো এখন বুমেরাং হয়ে ফিরে আসছে। বহুল বিজ্ঞাপিত স্বাস্থ্য সাথী কার্ড অনেক বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিং হোমগুলো গুরুত্ব দিচ্ছে না, কারণ তারা রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের অনেক বকেয়া ।তারাও বাধ্য হয়েছে কোর্টে যেতে।লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের অবস্থাও তথৈবচ, চালাতে গেলে আট হাজার কোটি টাকা লাগবে, অতো টাকার সংস্থান কোথায়?. বাজার থেকে ঋণ নিতে নিতে রাজ্যটা আজ প্রায় দেউলিয়া হবার জায়গায় ।জনসংখ্যার নিরিখে যদি মোট ঋণকে জনসংখ্যা দিতে ভাগ করা হয় তবে দেখা যাবে গড়ে প্রতিটি মানুষের ভাগে পড়ছে প্রায় ৫০০০০ হাজার টাকা।অর্থাৎ একটা পরিবারে যদি চার জন সদস্য থাকে সেক্ষেত্রে দাঁড়ায় দুই লক্ষ টাকা, শুধু গত একমাসে সরকারকে ঋণ নিতে হয়েছে ছয় হাজার কোটি টাকার মতন । গত দশ বছরে তৃনমূল সরকার বাম আমলের ঋণের টাকার প্রায় পাঁচ গুন ঋণ নিয়েছে।একদিকে তীব্র বেকারি অন্য দিকে জিনিসের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে সাধারণ মানুষের সংসার চালাতে নাভিশ্বাস।তার ওপর অনেক মানুষের রোজগারও কমেছে করোনা অতিমারির জন্য। অন্য রাজ্যের তুলনায় ইলেকট্রিক বিল আজ সবচেয়ে বেশী এই রাজ্যে ।এছাড়া ভুতুরে ইলেকট্রিক বিল দিয়ে মানুষের থেকে টাকা আদায় তো এই সরকার আসার কিছু দিন পরে থেকেই হচ্ছে, কারণ রাজ্য সরকারের সাথে গোয়েঙ্কার সক্ষ্যতা তো সর্বজনীন বিহিত।সাধারণ মানুষ লক্ষীছাড়া হলেও , গোয়েঙ্কাদের লক্ষীর ভান্ডার আজ ছাপিয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
সরকারকে এখন আয় বাড়াতে মদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, কি দুর্ভাগ্য আমাদের!তাই সরকার আনতে চলেছে দুয়ারে মদ, এই প্রকল্প নিয়ে বিভিন্ন স্তরের মানুষের সরকারের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ দেখা দিয়েছে । আজ অনেক প্রাইমারি স্কুলে প্রচুর শিক্ষক পদ ফাঁকা, সেই গুলো পূরণ না করলে স্কুলই গুলোই চালানো যাবে না, রাজকোষের যা অবস্থা তাতে যারা আসবে তাঁদের মাহিনা দেবে কি করে?.তাই দুয়ারে প্রাইমারি শিক্ষা তাই সিভিক টিচার? তাতে কি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হতে পারে?. আর ঘুষ দিয়ে চাকরি সেটা তো আজ সর্বজন বিদিত, নাই ব্যাখ্যা করলাম পিএসসি /এসএসসি দিয়ে লোক নিয়োগ যেমন আজকে অতীত তেমনি কর্মচারী দের ডিএ সেটাও অতীত. সরকার মানুষের ক্ষোভকে লঘু করার জন্য মেলা -খেলা , ক্লাবকে টাকা দিয়ে ভুলিয়ে দিতে চাইলেও , একটা জিনিস ভুল করছে যে পেটকে মেরে কোনো কিছু করলে মানুষ কিন্তু সেই গুলো বেশী দিন বরদাস্ত করে না, প্রমান কৃষক আন্দোলন,মাননীয়া একটা কথা ভুলে গেছেন যে চমক দিয়ে, বা পাইয়ে দেওয়া রাজনীতি দিয়ে বেশীদিন চলতে পারে না, কারণ ব্যক্তির চাহিদা অপরিসীম .অর্থনীতি বলে রাষ্ট্রকে তাঁর বাজেট নন প্রোডাকটিভ এক্সপেন্ডিচার কম করে প্রোডাকটিভ এক্সপেন্ডিচার বেশী করতে সেটাই রাষ্ট্রের উন্নয়ন, যার ফল প্রতিটি মানুষ ভোগ করতে পারে!(যেমন ধরুন আপনি একটা শারীরিক বিকলাঙ্গকে একটা ট্রলি রিক্সা দিলেন সেটা তাঁর ব্যক্তি গত লাভ হলো , বা কোনো মেয়ের বিয়ের জন্য ২৫০০০ টাকা দিলেন সেটা দান হলো কারণ আজকের দিনে ২৫০০০ টাকায় কোনো বিয়ে সম্পূর্ণ হয় না, কিন্তু চাষীর ঋণ মুকুব করলে অথবা সারের উপর ভর্তুকি বাড়িয়ে দিলে সেটায় শুধু চাষীই লাভবান হয় না, রাষ্ট্রও লাভবান হয় কারণ প্রোডাকশন খরচ কমবে , জিনিসের দাম কমবে )
বলতে পারেন গত দশ বছরে রাজ্যে কটা শিল্প এসেছে ? বাম আমলে যে কয়টা ছিলো সেগুলো ঝাঁপ বন্ধ করে পালিয়েছে, কারণ তোলাবাজী, দাদাগিরি।বলুন তো কেন বিনিয়োগ করা হবে রাজ্যে?. কি সুযোগ সুবিধা আছে আমাদের, আমরা জানি একটা শিল্প করতে গেলে চারটে জিনিস দরকার ১)জমি ২)মজদুর ৩) পুঁজি ৪)আর শিল্পর উপযোগী অবস্থান যেমন বিদ্যুৎ, রাস্তা ঘাট, রাজনৈতিক অবস্থান , এবারে আসুন বহুল বিজ্ঞাপিত ল্যান্ড ব্যাংক নেট ফল জিরো, বিদ্যুৎ বাম আমলে তৈরি হওয়া, বলুন তো বাম আমলে শেষ তৈরি হয়েছিলো দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়ে, তাঁর পরে গত দশ বছরে ওই ধরণের আর একটাতৈরি হয়েছে দেখান?. আর তোলাবাজী সেটা নাই বা বললাম!সরকার ও এটা বুঝে কিন্তু তাঁর ব্যর্থতা ঢাকতে ওয়েলফেয়ারকে উন্নয়ন বলে চালাবার জন্য কোটি -কোটি টাকার বিজ্ঞাপনের প্রলোভন দিয়ে মিডিয়াকে একপ্রকার কিনে রেখেছে এই ব্যাপারে দিল্লী আর কলকাতায় দুটোই এক ।তাই চাকরির দাবিতে আজ পাস করা ছেলে -মেয়েরা রাস্তায় আন্দোলন করছে দীর্ঘ দিন ধরে , তাঁদের খবর মিডিয়া চেপে যায়।চাকরির দাবিতে মঈদুল মিদ্দ্যা কে মরতে হয় , সেটা নিয়ে ঘন্টা খানেক হয় না, বেকারি নিয়ে কোনো আলোচনা করে না, খবর করে না, ওদের কাজ শুধু একটাই ,মানুষকে বিভ্রান্ত করে দাও, মিথ্যা প্রচার করো, মানুষকে বোকা বানাও আর এই কাজ টা ওরা সুনিপুন ভাবে করে চলেছে. আর শিক্ষিত হয়েও আমরা বারে বারে বোকা হচ্ছি .
এবার আপনারাই বলুন কোনটি ভালো?
১)কৃষি আমাদের ভিত্তি শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ।
না
২)মদ আমাদের শিল্প, মাতাল আমাদের ভবিষ্যত .
কোনটা??.