রাজনৈতিক রাজ্য

শেষ অবধি হাল ধরার দায়িত্ব মোদীকেই দিয়ে বিজেপিতেই আস্থা রাখলেন মমতা।।


চৈতালী নন্দী: চিন্তন নিউজ:২১শে ডিসেম্বর:–শেষ অবধি হাল ধরার দায়িত্ব মোদীকেই দিলেন মমতা।। এ যেন চোরকেই দেওয়া হোলো ঘর সামলানোর দায়িত্ব। নয়া নাগরিকত্ব আইন সিএএ র বিরুদ্ধে সমগ্র দেশ যখন উত্তাল, ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে একাধিক মৃত্যু হয়েছে  ,ঠিক তখনই নানা বিভ্রান্তি মূলক এবং অসংলগ্ন ও সন্দেহজনক মন্তব্য করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ‍্যমন্ত্রী।

যদিও শেষ পর্যন্ত প্রত‍্যাশিতভাবেই তিনি মোদির উপরেই তার আস্থা রেখেছেন। যদিও ৮ই জানুয়ারি এই আইনের বিরুদ্ধে বামেদের ডাকা ধর্মঘটের বিরুদ্ধতা করবেন বলে আগাম জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য তিনি নাকি বনধ সমর্থন করেন না। যদিও বিরোধী নেত্রী থাকার সময় তিনি নিজেই ৯৩ টি সফল বন্ধের রূপকার ছিলেন। যা পশ্চিমবঙ্গের অভূতপূর্ব ক্ষতি করেছিল।

প্রথমে দুদিন আগে তিনি রাষ্ট্রসঙ্ঘের তত্বাবধানে গনভোটের দাবী জানান। এই অবাস্তব এবং হাস‍্যকর দাবী নিয়ে যখন নানারকম প্রশ্ন ওঠে , যে কেন দেশের বাইরের তৃতীয় পক্ষ আমাদের দেশের অভ‍্যন্তরিন ব‍্যাপারে মাথা গলাবে ,তখন তিনি সেই দাবী থেকে সরে এসে জনমত সমীক্ষা বা (ওপিনিয়ন পোল) এর দাবী করেন , যা হবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের তত্বাবধানে। এছাড়াও আমাদের দেশের মানবাধিকার সংগঠনের  বিশেষজ্ঞরাও এই জনমত সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। কিন্তু ভারতের মানবাধিকার সংগঠন জানিয়ে দিয়েছে যে ,তারা তাদের মত জানাতে পারেন, কিন্তু জনমত যাচাই তাদের কাজ নয়। যদিও আইনটির বিরুদ্ধে তারাও সোচ্চার হয়েছেন।

প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী আক্রমণ শানিয়ে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এর বিরুদ্ধে ,পরে তিনি আবেদন নিবেদন এর নীতি বেছে নেন। তিনি মোদির কাছে আইনটি বাতিল করার আবেদন জানান। আসলে দুজনের মধ‍্যে গোপন বোঝাপড়াই এর কারন। না হলে পার্লামেন্টে এই আইনটি নিয়ে ভোটাভুটির সময় তৃনমুলের সাংসদরা অনুপস্থিত থাকবেন কেন? দেশে বিভিন্ন জনবিরোধী সিদ্ধান্ত যেমন কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল ,তিনতালাক বাতিলের আইন, রামমন্দির বিতর্কের কান্ডারী মোদির হাতে তিনি কেন এই সমস্যা সমাধানের ভার সঁপে দিলেন , এই নিয়ে আর সন্দেহের অবকাশ নেই।

আসলে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিল নিয়ে যেভাবে সারা দেশে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ,সেখানে তিনি যদি প্রকাশ‍্যে প্রতিবাদ না করেন ,তাহলে তাঁর সদিচ্ছা ও স্বরূপ সকলের কাছেই পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাই প্রতিদিন  নিত‍্যনতুন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তিনি। কারন প্রকৃতই যদি এই বিলের বিরুদ্ধে তিনি থাকতেন ,তবে ৮ই জানুয়ারির বামেদের ডাকা দেশজুড়ে ধর্মঘট,যার মুল দাবী এনআরসি বাতিল , তার বিরুদ্ধে তিনি যেতে পারতেন না।
প্রকৃতপক্ষে নিজের কৃতকর্মের ফলে মোদির বিরুদ্ধে যাবার নৈতিক জোর তিনি হারিয়ে ফেলেছেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।