রাজ্য

পর্যটনকেন্দ্র খোলার দাবিতে গরুমারা মূর্তি বিট অফিসের সামনে ১১ সংগঠনের বিক্ষোভ


 

সঞ্জিত দে, লাটাগুড়ি ১৮ জানুয়ারি:- – জিম, পার্লার খোলার পাশাপাশি মেলা করার অনুমতি দিলেও, জঙ্গল‌ও পর্যটনকেন্দ্র খোলার অনুমতি নয় কেন? এই প্রশ্ন তুলে আন্দোলনে নামলে শতাধিক পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা মানুষ

কোভিড বিধি শিথিল করা নিয়ে রাজ্য সরকারের সোমবারের নির্দেশিকা ঘোষণার পর, এবার জঙ্গল ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলার দাবিতে আন্দোলনে নামলো পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা মানুষদের ১১ সংগঠনের সদস্যরা। মঙ্গলবার গরুমারা জাতীয় উদ্যানের মূর্তি বিট অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান তারা।

প্রসঙ্গত: করোনা নিয়ে রাজ্য সরকারের জারি করা নতুন নির্দেশিকার বেশ কিছু বিষয়ে শিথিলতা এনেছে, এমন কি বেশ কিছু বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে নতুন করে। আর সেই নির্দেশিকাতে জিম,পার্লার, মেলা, বিয়ের অনুষ্ঠানে মানুষের উপস্থিতির উপর ছাড় দেওয়া হয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি রাজ্য সরকার। আর পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে পর্যটন ব্যবসা।যার ফলে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত সকলেই। সেই কারনে মঙ্গলবার গরুমারা জাতীয় উদ্যানের মূর্তি বিট অফিসের সামনে বিক্ষোভে সামিল হলেন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা ১১ টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা।যার মধ্যে রয়েছে রিসর্ট মালিকদের সংগঠন, ব্যবসায়ী সমিতি, জিপসি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, গরুমারা ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সহ আরো বেশ কয়েকটি সংগঠন।

১১ টি সংগঠনের প্রতিনিধি এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। তারা দাবি তোলেন অবিলম্বে জঙ্গল খোলার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে রাজ্য সরকারকে। করোনা বিধি শিথিল করে বেশ কিছু বিষয়কে ছাড় দেওয়া হয়েছে এমনকি স্পা, পার্লার সহ মেলা করার অনুমতি দিচ্ছে সরকার। তবে কেন বন্ধ থাকবে এই জঙ্গল এবং পর্যটন কেন্দ্র গুলি।পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকার ফলে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন টোটো চালক, ছোট ব্যবসায়ী, ছোট দোকানদার এমনকি জিপসি চালক কর্মচারী রয়েছেন কষ্টের মধ্যে সংসার চালাচ্ছেন। অর্থ উপার্জন না হওয়ায় রীতিমতো দিশেহারা তারা।

তাই দ্রুত পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলার দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করলেন।তারা হুমকি দিয়েছে যতদিন পর্যন্ত না জঙ্গল খোলা হবে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন, এমনটা হুমকি দিয়েছে এগারটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

গরুমারা ট্যুরিজম ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেব কমল মিশ্র বলেন, দেব কুমার মিশ্র বলেন, “আমরা রাজ্য সরকারের কাছে দাবী করছি দ্রুত এই জঙ্গল এবং পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলা হোক, এমনকি কার সাফারিও চালু করা হোক। জঙ্গল বন্ধ আদিবাসী নৃত্য করে যারা সংসার চালাতেন, তাদেরও কষ্টের সংসার চলছে। পর্যটন কেন্দ্রের পাশে থাকা ছোট ছোট দোকানদার তাদের ব্যবসা বন্ধের পথে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে এই দোকান করে সংসার চালাতেন সেগুলোও বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় রিসর্ট গুলিতে পর্যটক আসছে না । টোটো চালকদের জীবনযাত্রা রীতিমতো থমকে গিয়েছে। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবী করছি দ্রুত খুলে দেওয়া হোক সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র গুলি ।”

মজিদুল আলম জিপসি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জানান, “আমরা একত্রিত হয়ে ১১ টি সংগঠন মিলে আন্দোলনে নেমেছি।আমাদের মূল লক্ষ্য জঙ্গল খোলা। কারণ ডুয়ার্সের জঙ্গল কে ঘিরে আমাদের রুটি রোজী চলে। এখানে জিপসি মালিক , টোটো চালক, ছোট ব্যবসায়ী, রিসোর্ট মালিকরা নির্ভর করে পর্যটনের উপরে। গতকাল রাজ্য সরকারের ঘোষণার পর থেকে জিম খুলে দেওয়া হয়েছে, মেলা চলছে সব রকম অনুষ্ঠানের জন্য সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে। সে জায়গায় আমাদের জঙ্গল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে কেন? আমাদের একটাই দাবি দ্রুত খোলা হোক । আমাদের এলাকায় ৭৯ টি জিপসি রয়েছে।”


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।