রাজ্য

বিশ বাঁও জলে কান্দি মাস্টার প্ল্যান


তুলসী কুমার সিংহ, চিন্তন নিউজ, ৭ এপ্রিল: মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমা – ময়ুরাক্ষী, দ্বারকা ও ব্রাহ্মনী নদী দ্বারা বেষ্টিত। এছাড়াও কুয়ে ও বেলের মতো আরও ১০টি শাখানদী আছে। ফি বৎসর বন্যার কবলে পড়েন কান্দির ৫০টি পঞ্চায়েতের প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষ ।
এই বন্যার হাত থেকে বাঁচার জন্য কান্দি মহকুমার বিভিন্ন স্তরের মানুষের আন্দোলন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে কোনো সদর্থক সাড়া পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময় বিধানসভাতে প্রস্তাব গৃহীত হয়। অবশেষে ২০১২ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থমন্ত্রী প্রনব মুখার্জি কান্দির বন্যা নিয়ন্ত্রনের জন্য ‘কান্দি মাস্টার প্ল্যান’ অনুমোদন করেন। এই কাজের জন্য ৪৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হলে কান্দির মানুষ বাঁচার আশা দেখেন। ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দপ্তর কাজ শুরু করলেও আজ অবধি কাজের অগ্রগতি সেভাবে না ঘটায় বর্ষার সময় বন্যার আশঙ্কা থেকেই যায়। এর ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ উপছে পড়ছে ।
কান্দি ব্লকের হিজল গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮টি গ্রাম নদী বেষ্টিত। বছরে তিন মাস এই গ্রামগুলি বন্যা কবলিত থাকে। মুর্শিদাবাদ জেলার শষ্যভান্ডারকে বাঁচাতে এই মাস্টার প্ল্যান প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। কি আছে এই মাস্টার প্ল্যানে? বছরের অন্য সময় চাষের জলের জন্য বড় বড় জলাধার তৈরী, পলি তুলে নদীর নাব্যতা বাড়ানো, নদীর পাড় বাঁধানো, ছোট ছোট নদী ব্রীজ তৈরী করা ইত্যাদি।
নদীর তীরে ২৪০ কিমি বাঁধ আছে। যার রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব সেচ দপ্তরের। এই মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে ১০০ কিমি নদীর বাঁধের কাজ চলছে, বাকি ভগবানের ভরসায়। সেচ দপ্তরের বাস্তুকারের কথায় – যে সমস্ত বাঁধের অবস্থা খারাপ সেগুলি মেরামতির জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে জরুরী ভিত্তিতে কাজ করার জন্য। এখনও পর্যন্ত চল্লিশ কিমি বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, তাতেও বিস্তর অভিযোগ গুনগত মান নিয়ে। এই কাজ কবে সম্পূর্ণ হবে কেউ তা জানে না। প্রতি বছর বর্ষাকালে কান্দির মানুষ বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটায়। বর্তমানে এই মাস্টার প্ল্যানের কৃতিত্ব কার বেশী, এম এল এ না এম পি ‘র – এই চাপান-উতোর ভোটের বাজারে বেশ উপভোগ্য ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।