রাজ্য

নজরে ভোট : আলিপুরদুয়ার


পাপিয়া সিনহা, চিন্তন নিউজ, ৭ এপ্রিল: আলিপুরদুয়ার ভূটানের পাহাড়ের নীচে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের ডূয়ার্স অঞ্চল ‌মূলত নদী এবং চা বাগান দ্বারা বেষ্টিত। এখানে বিভিন্ন আদিবাসী উপজাতির বাস। এই লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসের দশরথ তিরকে, যিনি বর্তমানে সাংসদ। বিজেপির প্রার্থী জন বার্লা, এবং আর‌এসপি প্রার্থী মিলি ওঁরাও তিরকে, এছাড়া কংগ্রেস, এস‌ইউসিআই, ও নির্দল প্রার্থী দু’জন লড়ছেন।
আলিপুরদুয়ারের অলিন্দে কান পাতলে শোনা যায় চা বাগান শ্রমিকদের কান্না। আলিপুরদুয়ার আলাদা জেলা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে আলিপুরদুয়ার। কিন্তু সাধারণ মানুষ আজও কোনো সুবিধা পায় না। সরকারি কাজ, বিশেষ করে আইন, আদালত করতে ছুটতে হয় জলপাইগুড়ি সদর। আদালত হয়নি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের হাল খুব খারাপ। কোনো মহকুমার সংখ্যা বাড়েনি। বিধানসভা ভোটের আগে চা বাগান শ্রমিকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মূখ্যমন্ত্রী, এই এলাকায় শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবেন। যেখানে রোজ 350 টাকা পাওয়ার কথা, সেখানে শ্রমিকরা পান মাত্র 176 টাকা। ডানকানদের চা বাগান গুলি শ্রমিকদের বঞ্চনার মাত্রা বাড়িয়ে তুলছে। কেন্দ্র, রাজ্য দুই সরকার এই ব্যাপারে নিস্ক্রিয়। সাংসদ একদিন‌ও সংসদে এই এলাকার সমস্যা নিয়ে কথা তোলেননি। স্থানীয় মানুষ বলেন, ‘‘কলেজ হসপিটাল হয়েছে, তবে বর্ষার দিনে নদী উপচে পড়ে, ফলে যোগাযোগের সমস্যা রয়েই যায়। তখন না পৌঁছয় চিকিৎসা পরিষেবা,  না শিশুরা স্কুলে যেতে পারে।”
তোর্সা, কালচিনি, রায়ডাক, জয়ন্তী এবং শোঙ্কাসা এই পাঁচটি মুখ্য নদী ছাড়াও অজস্র ছোট নদী এবং তাদের শাখানদী-উপনদী আলিপুরদুয়ার দিয়ে বয়ে গিয়েছে। ১৯৭৭ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রটি ছিল বামেদের দখলে। এখানে তাদের জনভিত্তি ছিল প্রচুর। ২০১৪ সালে তিরকে আরএসপি থেকে তৃণমূলে যোগদান করেন। সে বার তিনি ২১ হাজার ৩৯৭ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী আরএসপি প্রার্থীকে হারিয়ে দেন।
আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১৬,১৩,৪১৭ জন। তৃণমূলের দশরথ তিরকে দাবি করছেন আলিপুরদূয়ার জুড়ে উন্নয়নের জোয়ার ব‌ইছে। বিজেপির জন বার্লা বলছেন চা বাগান শ্রমিকদের কথা তাঁর মতো করে কেউ বোঝেন না। বামফ্রন্ট সমানে শ্রমিকদের হয়ে সারাবছর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
এখন আলিপুরদুয়ারের মানুষ এই লোকসভায় কাকে তাঁদের প্রতিনিধি করে পাঠান তা জানা যাবে ২৩শে মে। আলিপুরদুয়ার জুড়ে এখন ভোট বাজার। আগামী ১১ই এপ্রিল এখানে ভোট।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।