দেশ

কৃষিক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা যবনিকার অন্তরালে


একটি বিশেষ প্রতিবেদন: কল্পনা গুপ্ত: চিন্তন নিউজ:৬ই আগস্ট:- ২০২১ – দিল্লীর পার্লামেন্ট হাউসের কাছে ২০০ জন মহিলা কৃষিকর্মী তাদের অধিকার ও মর্যাদার দাবিতে উত্তপ্ত জুলাই মাসের দিনগুলিতে খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করলেন নানা স্তরীয় নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে। দেশের নানাপ্রকার মহিলা সংগঠনগুলি থেকেও এই অবস্থানে প্রতিনিধিত্ব করেন। বক্তারা তাদের বক্তব্যে বর্তমান অস্থায়ী এক রুগ্ন কৃষি সমস্যাগুলির প্রতি তাদের ক্ষোভ উগরে দেন এবং অনাস্থা জানান বর্তমানে কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি সরকারের প্রতি। বর্ষা মরশুমের সেশন চলতে থাকা অদূরে পার্লামেন্ট কক্ষের বাইরে এই মহিলা সংসদ ( অবস্থান) আকারে ক্ষুদ্র হলেও তারা তাদের অধিকারের জন্য নির্ভীক পদক্ষেপ এবং আত্মবিশ্বাসে ঋদ্ধ সচেতনতায় যেন ঝরে পড়ছিলো নারী শক্তির এক অভূতপূর্ব প্রকাশ।

কৃষিক্ষেত্রে মহিলাদের কাজে লাগিয়ে পুরুষরাই একমাত্র সাফল্যের ভাগীদার হয়ে থাকে। এই প্রথার উচ্ছেদের জন্য কৃষিতে নারীরা দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মী হয়ে থাকার অসম্মান প্রত্যাখ্যান করে সমঅংশীদার মহিলা কৃষকের মর্যাদার জন্য এই লড়াইয়ে নেমেছেন। প্রতিটি মহিলারই সমাজে, কর্মক্ষেত্রে, পরিবারে নিজস্ব অবদান রয়েছে যা ঢাকা পড়ে থাকছে যবনিকার অন্তরালে অত্যন্ত দুর্বল স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে, দ্বিতীয় স্তরীয় লিঙ্গভেদের দৃষ্টিতে। কিন্তু দেশের এক বিরাট সংখ্যক মহিলা এখনও এই বিষয়ে উদাসীন।

দেশের দুর্বল সামাজিক, রাজনৈতিক পরিকাঠামোয় কৃষিক্ষেত্রে নারীশক্তির স্বীকৃতি না দিলেও একথা পরিসংখ্যান দিক দিয়ে প্রতিষ্ঠিত যে উন্নয়ণশীল দেশগুলিতে খাদ্য উৎপাদনের ৫০% মহিলা উৎপাদনকারী। কিন্তু আমাদের দেশের সামাজিক মনোভাবের উত্তোরণ ঘটেনি একে স্বীকৃতি দেবার। তাই জুলাই মাসের তপ্তদিনে এই মহিলা অবস্থান নতুন কোন নারীবাদী সম্মেলন নয়। সেই চিরাচরিত সাম্যের অধিকারের দাবী।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি বিরোধী বিলের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের আন্দোলনে মহিলাদের এক বিরাট অংশ শুধু অংশ নেয়নি অর্থনৈতিক অনুদান সংগ্রহে বিপুল সহায়তা করেছে।

২০১৩ সালের ৯ ই এপ্রিল গ্লোবাল গ্রীনগ্রান্ড ফান্ডের রিপোর্ট অনুযায়ী – ভারতের কৃষিতে মহিলা কৃষকদের মুখ অদৃশ্যমান।… হিমালয় অঞ্চলে কৃষিক্ষেত্রে বছরে কাজের নিরীখে অবদান- বলদের ১০৬৪ ঘন্টা, পুরুষের ১২১২ ঘন্টা, মহিলাদের ৩৪৮৫ ঘন্টা।”

কৃষিক্ষেত্রে মহিলা কৃষকদের জন্য সহায়ক পরিবেশ গড়ে উঠুক, সম মর্যাদার জায়গা তৈরি হোক – এই হোক প্রতি বছর ১৫ ই অক্টোবর জাতীয় মহিলা দিবসের অঙ্গীকার।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।