চৈতালী নন্দী, চিন্তন নিউজ, ২৭ ডিসেম্বর: প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়ে মঙ্গলবার সমাবর্তনের দ্বিতীয় দিনে যাদবপুর ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিন রাজ্যপাল সমাবর্তন উৎসবে যোগ দিতে ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঢোকামাত্র বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্রছাত্রীরা। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাজ্যপাল সমাবর্তনে যোগ দিতে পারেননি। তিনি রাজ্যের শিক্ষা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ছাত্রছাত্রীরা একটি প্রতিকী চিঠিতে তাঁকে আচার্য পদ থেকে বরখাস্ত করে।
এই অসন্তোষের সূত্রপাত হয় ১৯ সেপ্টেম্বর এবিভিপির একটি অনুষ্ঠানে সাংসদ বাবুল সুপ্রীয়র যোগদানকে কেন্দ্র করে। ছাত্রছাত্রীরা সাংসদ ও তার সুরক্ষা বাহিনীর হাতে নিগৃহীত হয় ও এবিভিপি দুষ্কৃতীদের দ্বারা তাদের (এসএফআই) সংসদ অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করাহয়। বহু মূল্যবান নথি ও কম্পিউটার পুড়ে যায়। এই সময় হঠাৎ রাজ্যপাল সেখানে উপস্থিত হয়ে বাবুলকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
এদিন ছাত্রছাত্রীরা ‘নো এনআরসি’ ‘নো সিএএ’ ব্যাজ পড়ে বিক্ষোভে সামিল হয়। এছাড়াও তাদের বক্তব্য ছিল রাজ্যপাল এনআরসি, সিএএ, এনপিআর, এস/এসটি কমিশন সহ সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের উপর হিংসা প্রভৃতি বিষয়ে সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এদের আর তৃনমুলের নৈরাজ্যের ফলে দেশ তথা রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু একে পরিকল্পিতভাবে অশান্ত করে তোলে তৃনমুলী ‘শিক্ষাবন্ধু সমিতি’র সদস্যরা।
এদিন যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য ছিল, আচার্য হিসেবে করনীয় দায়িত্ব পালন না করে তিনি একটি বিশেষ দলের দায়িত্ব পালন করছেন, যা পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক। তারা সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটিউটের ১০৪ বি ধারা অনুযায়ী আচার্যের অনুপস্থিতিতে উপাচার্যের বার্ষিক সমাবর্তনের দায়িত্ব পালনের যে কথা বলা আছে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে। এরপর উপাচার্য সুরঞ্জন দাস অনুষ্ঠান শুরু করেন।
এদিন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য রাজ্যপাল বলেন, রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনের পরিস্থিতি দেখে তিনি ভীত।রাজ্যপাল ছাড়া সমাবর্তন করা যায়না জেনেও তা করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে যে কোনো উপায়ে নিজের প্রচার করতে তিনি বদ্ধপরিকর। রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনায় তিনি তার প্রমাণ রাখছেন। বিশেষতঃ এনআরসির বিরোধিতা করায় দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পুলিশ পাঠিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারিগর যে বিজেপি, এতে কোনো সন্দেহ নেই।