রাজ্য

এজি-বেঙ্গল কে এড়িয়ে যাওয়ার অসাংবিধানিক পদক্ষেপ রাজ‍্যের।


চৈতালী নন্দী: চিন্তন নিউজ:৩রা নভেম্বর :–পেনশন সংশোধনের ক্ষেত্রে এজি-বেঙ্গল কে এড়িয়ে যাওয়ার অসাংবিধানিক পদক্ষেপ রাজ‍্যের।।
রাজ‍্যের আর্থিক ক্ষেত্রের কোনো দূর্নীতি বা অসঙ্গতি যাতে প্রকাশ‍্যে না আসে সেজন‍্যে (এজি-বেঙ্গল) একাউন্ট জেনারেল দপ্তরকে এড়িয়ে পেনশন সংশোধন করতে চলেছে নবান্ন। রাজ‍্য সরকারের এই পদক্ষেপ নজিরবিহীন তো বটেই , এই পদ্ধতি সংবিধানের রীতিনীতিরও বিরোধী।এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারও এখনও পর্যন্ত তা লঙ্ঘন করেনি।

রাজ‍্যসরকার ঠিক করেছে ২০১৬সালের ১লা জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অবসর নেওয়া বা শীঘ্রই অবসর নেবেন এমন সরকারি  কর্মচারীদের পেনশন সংশোধনের নথি, নিয়মবহির্ভূত ভাবে এজি-বেঙ্গলকে টপকে সরাসরি অর্থদপ্তরকে দিয়ে করাতে চলেছে।

নতুন বেতন কমিশন চালু হবার পর  সরকারি কর্মচারীদের বেতনকাঠামো সংশোধনের সাথেসাথেই পেনশন প্রাপকদের সার্ভিস বুকও সংশোধনের জন‍্য এজি-বেঙ্গলের কাছে  পাঠানো হয়ে থাকে। এবার  রাজ‍্যসরকার সেই নিয়ম ভেঙে  এজি-বেঙ্গলকে এড়িয়ে তা অর্থদপ্তরের কাছে পাঠানো হবে সংশোধনের জন‍্যে।

অবসর গ্রহনের অনেক আগেই প্রত‍্যেক সরকারি কর্মচারীদের সার্ভিসবুক এজি দপ্তরে চলে আসে। ওখানের কর্মীরা অডিট করে সেই পেনশন প্রাপকের তার চাকরি জীবনে বেতনকাঠামো হিসাব করে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর প্রাপ‍্য পেনশন কতো হবে, কখনও বর্ধিত পেমেন্ট হয়েছে কিনা অথবা তার কোন প্রাপ‍্য বাকী কিনা হিসাব করে। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মীর দপ্তরের পেনশনের  হিসেবের সঙ্গে তা মিলে গেলে বের হয় পিপিও (পেনশন পেমেন্ট অর্ডার) ।

সমগ্র দেশে একমাত্র এই পিপিও দপ্তর ই হোলো এজি-বেঙ্গল। ২০১৬/২০১৯  এই তিন বছরের এক লক্ষ কর্মীর সার্ভিস বুক এবার আর এজি-বেঙ্গলের কাছে না এসে চলে যাবে অর্থদপ্তরে। এটা কিন্তু রাজ‍্যের পেনশন পদ্ধতি সরলীকরণের জন‍্যে হচ্ছে না।এটা এজি-বেঙ্গলের নজরদারি এড়িয়ে যাওয়ার এক অসাংবিধানিক পদক্ষেপ।

বর্তমানে সব রাজ‍্যই অনলাইনে এই বেতন পেনশনের হিসাব করে। একে বলে এইচআরএমএস(হিউম্যান রিসোর্স ম‍্যানেজমেন্ট সিস্টেম)।প্রতিটি রাজ‍্যই এই সিস্টেমকে এজি র সাথে যুক্ত করেছে, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া।রার বার অনুরোধ সত্বেও এজিকে এই সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করতে অস্বীকার করে রাজ‍্য। এর ফলে  এই কর্মী সঙ্কটের সময় তীব্র চাপের সম্মুখীন হবে সরকারি ট্রেজারির কর্মচারীরা।ট্রেজারি কর্মচারীদের আশঙ্কা হয়তো এই পুরো কাজটাই আউটসোর্সিং করা হবে।

বেসরকারী সংস্থা এই কাজ করলে ভূলের যেমন সম্ভাবনা থেকে যাবে তেমনিভাবে  হিসেবে ভূল হলে অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা পড়বেন অসুবিধায় । বামফ্রন্ট আমলে পঞ্চম বেতন কমিশন কার্যকর করা হয়েছিল সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই।প্রকৃতপক্ষে এজি মানেই নজরদারি, এজি মানেই জবাবদিহি। অর্থদপ্তরের কোনো ভূলের বা অনিয়মের  জবাবদিহি থেকে নিজেদের আর্থিক বেনিয়ম কে আড়াল করতেই রাজ‍্যসরকারের এই পদক্ষেপ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।