জেলা

হুগলি বার্তাঃ-


চিন্তন নিউজঃ-১৯শে জানুয়ারি:- দেবারতি বাসুলীঃ-শহীদ ছাত্রনেতা কমরেড সৈফুদ্দিন মোল্লার শহীদ দিবস পালন ভারতের ছাত্র ফেডারেশন কোন্নগর আঞ্চলিক কমিটির পক্ষ থেকে। উপস্থিত ছিলেন ছাত্র আন্দোলনের প্রাক্তন নেতৃত্ব কমরেড অভিজিৎ চক্রবর্তী সহ অন্যান্য ছাত্র নেতৃবৃন্দ।

সুপর্না রায়-চন্দনগরের ৩১নং ওয়ার্ডের খলিসানির ব্রাম্ভনপাড়ায় অবস্থিত দিশারি হাসপাতাল যা বামফ্রন্ট সরকারের তৎকালীন আমলে ২০০০ সালের ১১ই মার্চ জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী দপ্তরের মন্ত্রী কমরেড গৌতম দেবের হাত ধরে এই দিশারি হাসপাতালের পথচলা । হুগলির আশেপাশে বহু মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা পেতেন । কিন্তু ২০১১ সালের পালাবদলের পর থেকে এই হাসপাতাল তার গরিমা হারায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ তৃনমুল পরিচালিত পৌর বোর্ডের সদিচ্ছার অভাবে এখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থ্যা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। যে হাসপাতালে হুগলি জেলার দিকপাল চিকিৎসক ডাঃ প্রসেনজিৎব্যানার্জী , ডাঃ আনন্দ চ্যাটার্জী ,ডাঃ কে এন ব্যানার্জী ,ডাঃ দালাল এর মতো চিকিৎসা করতেন আর বহু রোগী কম পয়সায় পরিষেবা পেতেন — এখনকার সময়ে সেই রোগীর ভীড় নেই আর চিকিৎসক রাও আর যুক্ত নেই এই হাসপাতাল এর সঙ্গে । যে হাসপাতালে একসঙ্গে অনেক রোগের সেবা চলতো এখন সেখানে মেটারনিটি ওয়ার্ড ছাড়া আর কোন ধরনের চিকিৎসা হয় না। এই নিয়ে চন্দননগর তৃনমুল পৌরবোর্ডের কোন হেলদোল নেই। আগামী পুরভোটে বামফ্রন্ট পরিচালিত পৌরবোর্ড গঠন হলে সর্বপ্রথম এই দিশারি হাসপাতাল উন্নয়নের কাজ হবে সর্বপ্রথম।

গোপাল চাকীঃ-২০১০ সালের ১৯ শে জানুয়ারী সল্টলেক আমরি হাসপাতালে শেষ নি্শ্বাস ত্যাগ করেন।সি পি আই এম এর হুগলী চুঁচুড়া জোনাল কমিটির প্রাক্তন সদস্য, হুগলী আঞ্চলিক কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক, হুগলী চুঁচুড়া কেন্দ্রীয় নাগরিক কমিটির সম্পাদক, বালিমোড় বিজয় মোদক ট্রাষ্টির সম্পাদক ছিলেন কমরেড দিলীপ গাঙ্গুলী ৷ ডি ওয়াই এফ আই এর হুগলী জেলার প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন, ছিলেন প্রথম জেলা কমিটির সভাপতি ৷ হুগলী কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সম্পাদক ছিলেন৷ PRC হুগলীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ৷ পৌর কর্মচারী ও সি আই টি ইউ এরও প্রথম সারির নেতাও ছিলেন উনি ৷ হুগলী-চুঁচুড়া বই মেলার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সহ সভাপতি ছিলেন।

এ শহরের ইতিহাসে পার্টি আক্রান্ত হওয়ার বহু ইতিহাস আছে, পাশাপাশি প্রতিরোধের ইতিহাসও সমানভাবেই উজ্বল ৷ এই প্রতিরোধের সংগ্রামেরই ‘ক্যাপ্টেন’ ছিলেন দিলীপ গাঙ্গুলী ৷ সে কারনেই সেই প্রতিরোধ বাহিনীর অন্যতম সদস্য প্রয়াত অনিল বসু ওনাকে আজীবন “ক্যাপ্টেন” বলেই ডাকতেন ৷ এ শহরে ‘নেতা’ বলতে অনেকেই আজও দিলীপ গাঙ্গুলীকেই বোঝেন ৷ এ শহরের শেষ নেতা যার সাহস ও কমান্ড ছিল পরিপূর্ন ৷ অথচ নারকোলের মত ছিল মনটা ৷ বাইরে থেকে যতটা কঠিন, ভেতরে ততটাই নরম ৷

জীবনে কখনও পার্টি জেলা কমিটির সদস্য হননি, অথচ অনেক সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যরা ওনাকে নেতা মানতেন ৷ গোটা জীবন দিয়েই তিনি প্রমান করে দেখিয়েছিলেন, পদ নয় যে নেতৃত্ব দেয় সেই নেতা ৷

বাবা ব্যবসা করার জন্য যে দোকান ঘরটা ভাড়া নিয়ে দিয়েছিলেন, সেটাই এ শহরের অফিসিয়াল পার্টি অফিস ৷ রাতের পর রাত আত্মগোপন করে কাটাতে হয়েছে ধানক্ষেতে, নৌকায়, অথবা কোনো কমরেডের বাড়িতে ৷ নিজের ফুলসজ্জার রাতে পালাতে হয়েছে ! শেষ বয়সে মজা করে বললেন, “আমি তো এক্সট্রা টাইমে বাঁচছি ” ৷ মৃত্যুর দু বছর আগেই বাইপাস সার্জারী হয় ৷ দিল্লী যাওয়ার পথে সারাদিন ফোনে সবটা তদারকি করেন অনিল বসু নিজেই ৷

আমরি হাসপাতালে শেষ বার ভর্তি ছিলেন জ্যোতি বসুর পাশের বেডেই ৷ দিলীপ গাঙ্গুলীর মৃত্যুর খবর যখন অনিল বসু পান উনি শুনেই বলেছিলেন, ” ক্যাপ্টেনকে আমরা সসম্মানে বিদায় দেবো, আজ জ্যোতি বাবুর শোক মিছিল হবে তাই কাল দিলীপ দার শেষকৃত্য হবে” ৷ সেই মত দিলীপ কাকুর শেষ জীবনের সঙ্গী কমরেড শিবাজি মিত্র সব ব্যবস্থা করে ৷ পরদিন ২০ শে জানুয়ারী, সরস্বতী পুজোর দিন যখন সল্টলেক থেকে দেহ নিয়ে আসা হয় তখন বালিমোড়ে তিল ধারনের জায়গা নেই ৷ সম্ভবত এ শহরে মন্ত্রী সাংসদ ছাড়া কখনও বোধহয় কোনো শোকমিছিল এত মানুষ দেখেনি ৷।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।