কাকলি চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:৩১শে মে:- দুর্গাপূজো, কুমোরটুলি একে অন্যের পরিপূরক। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু লকডাউন, বন্ধ পটুয়াপাড়ার শিল্পীদের ব্যস্ততা। চৈত্র মাসের অন্নপূর্ণা, বাসন্তী পূজো কিংবা শীতলা কোনো ঠাকুরেরই বায়না ছিল না। শুধু তো প্রতিমা শিল্পীরা নন শোলা, জরির কাজ, গহনা প্রভৃতির সঙ্গে জড়িত আরও অনেক মানুষ। ১ লা বৈশাখ, অক্ষয়তৃতীয়াকে কেন্দ্র করে শোলার ফুল, মালার দোকানগুলোতে হাজার পঁচিশ টাকার ব্যবসা হয়। জরির কাজের কারিগরদের ঘরে লক্ষ টাকার মালমশলা। বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে যে সব অর্ডার আসত সব বন্ধ। ক্রমশ ক্ষতি বাড়ছে সাজসজ্জা ও জরি শিল্পের কারিগরদের। ২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে ক্ষতির পরিমাণ।
বিদেশ থেকেও আসে প্রতিমার অর্ডার। জলপথে বা আকাশপথে বাক্সবন্দী হয়ে প্রতিমার বিদেশযাত্রার ছবি আমরা দেখেছি। না, কোনো দুর্গা প্রতিমার অর্ডার মেলেনি এখনও। শহরের বড়ো থেকে ছোট পূজো কমিটিগুলো কিংবা শহরতলির ক্লাবগুলো তাদের বাজেট কাটছাঁট করেছে, অনেক জায়গায় এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি আদৌ পূজো হবে কিনা। সব শিল্পীদের কপালে এবার জুটবে না প্রতিমার বরাত। রং, মাটি, গয়না, সাজসজ্জা কতটা পরিমাণ অর্ডার দেবেন শিল্পীরা অনুমান করতে পারছেন না।
কারিগরদের বেতন বন্ধ দু মাস। ভরা মরশুমে বাড়তি পাওনা মেলার আশা নেই। কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সমিতির দেওয়া একবেলা খাবার ভরসা। আর যা কিছু জমানো সামান্য টাকায় কোনোমতে চলছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং হলেও অন্যান্যবারের মত ব্যবসার আশা নেই। লক্ষ্মীপূজো, কালীপূজো থেকে বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণ বাঁচিয়ে রাখে যে হাজার হাজার পরিবারকে তারা আজ সত্যিই সংকটে। মাটির প্রতিমা এদের মুখের ভাত জোগান দিতে, হাসি ফোটাতে আজ অপারগ।