কৃষ্ণা সাবুই: চিন্তন নিউজ:২৪/০৩/২০২৩:- প্রতি বছর ২৪শে মার্চ বিশ্ব যক্ষা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে এই মারণ রোগের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করা হয়। যক্ষা একটি সংক্রামক রোগ। মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবার কুলোসিস এই রোগের জীবানু। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশি কফ থুথুর মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অনেকে একে ক্ষয়রোগও বলে, কারণ যার এই রোগ হয় সে শীর্ণকায় হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষয় হয়।
যক্ষা প্রধানত ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় তবে অনেক সময় লিম্ফ গ্ল্যান্ড, অন্ত্রে শিড়দাঁড়ায় হয়। কি ভাবে বোঝা যাবে , কোনো ব্যক্তি যক্ষায় আক্রান্ত কি না ? যদি কারও প্রায়ই রাতের দিকে জ্বর হয়, তিন সপ্তাহের বেশী কাশি হয়, কাশতে কাশতে গলা থেকে রক্ত বের হয়, ওজন কমে যায়, তাহলে দ্রুত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে।
কারন আমরা এর ভয়াবহ দিকটা জানি।১৮২২সালে রবার্ট কট্ টিউবার কুলোসিসের বীজানু, মাইকোব্যাক্টেরিয়াম আবিস্কার করেন। কিন্তু তাঁর আবিস্কারের ১০০বছর পর “হু” বিশ্ব যক্ষা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এই রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার। অনেক আগের দিনের কথা ছেড়ে দিলেও ২০১১ সালেই সারা পৃথিবীতে ৮৭লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে মারা গেছে ১৪লাখ। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, এই রোগ যাতে না হয় তার নিরন্তর চেষ্টা করে যেতে হবে। যে পরিসংখ্যান দেখা গেল, তাতে মৃত্যু ঘটেছে ৯৫ভাগ মধ্য আয়ের দেশগুলিতে।গরীব শ্রেনী বেশী আক্রান্ত। কারণ অপুষ্টিজনিত, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এর জন্য দায়ী। তবে বায়ুবাহিত এই রোগ সবার জন্যই ঝুঁকিপুর্ন।
আশার কথা , ধীরে ধীরে এই রোগের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। ১৯৯০ সালের পর এই রোগ ৪০ ভাগ কমেছে। আমরা প্রথম দেখেছি, ইনজেকশন স্ট্রেপটোমাইসিন রোগীকে দেওয়া হোতো, কিন্তু বর্তমানে ‘ডট’ থেরাপি দারুন সাফল্য এনেছে। আরো উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ী বাড়ী গিয়ে রোগীকে পরীক্ষা করে, প্রয়োজনে ডাক্তার এর কাছে পাঠায়। রোগ নির্নয় হোলে এখন বাড়ীতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হয়।
সমস্ত মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। সুচিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া, ঘর বাড়ী পরিস্কার রাখা, আক্রান্ত ব্যক্তি যেন কাশির সময় মুখে কাপড় চাপা দেয় খেয়াল রাখতে হবে।
কফ থুতু একটা পাত্রে রেখে মাটীতে পুঁতে দিতে হবে। ওষুধ নিয়ম মেনে খেতে হবে।
যতদিন না যক্ষা রোগ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হচ্ছে, ততদিন এই এই প্রচার করে যেতে হবে- এটাই হোক আজকের দিনের অঙ্গীকার ।