রাজ্য

লকডাউনে খুব সংকটে চা বাগানের শ্রমিকদের জীবন


মিঠুন ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ:৫ই এপ্রিল:–করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশ লকডাউন হওয়ায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে উত্তরবঙ্গের চা বাগান গুলি , এমনিতেই বছরভর ধুঁকতে থাকে চাবাগান গুলি তারপর এই সময় লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে , যদিও বেশিরভাগ বাগান এই এলাকায় বন্ধ তবুও অনেক সময় বাগান লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় কখনো দিনমজুরি করে কিংবা কখনো বাগানের নষ্ট হয়ে যাওয়া ডাল খড়ি বিক্রি করে কিছু পরিবারের দিনগুজরান চলত , মার্চ মাসের দিকটায় নতুন পাতা গজালে কিছু চালু বাগানে সেই পাতা উঠানোর বিষয় থাকে কিন্তু এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না যার দরুন শ্রমিকরা প্রায় না খেয়েই দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন, কয়েকটি বাগানের খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারা গেল দার্জিলিং জেলার

গঙ্গারামপুর টি স্টেট ,ত্রিহানা টি স্টেট, নকশালবাড়ি চা বাগান,গয়াগঙ্গা চা বাগান ,লাল পাহাড়ি বাগান, এই সমস্ত বাগান এবং অনেক বাগানেই না আছে পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা না আছে কোনরকম সরকারি রেশন বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা , না আছে প্রশাসনের কোন রকম খোঁজ খবর নেওয়ার দায়দায়িত্ব , বিভিন্ন সরকারি দলের জনপ্রতিনিধি যাদের করার ক্ষমতা অনেক বেশি, ছবি তোলা বাদ দিলে তারা চা বাগান এলাকায় কখনো জান কিনা সেটা নিয়েও বিস্তর গবেষনা হতে পারে , এ প্রসঙ্গে সিআইটিইউ র দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম ঘোষ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে উনি বলেন এই মুহূর্তে দ্রুততার সঙ্গে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে সমস্ত বাগানে সমস্ত শ্রমিক পরিবারের সুস্থ রেশন বণ্টনের ব্যবস্থা যদি না করা যায় এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা যদি না করা যায় তাহলে করোনা প্রয়োজন হবে না , না খেতে পেয়ে এবং বিনা চিকিৎসায় এমনিতেই বাগান শ্রমিকরা মারা যাবে।

এরকমই একটি বাগান জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝার , শ্রমিক পরিষেবা এবং মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য একসময় এই বাগান ভারত শিরোপার তকমা পেয়েছিল কিন্তু লাগাতার শুখা মরশুম এ প্রায় বসিয়ে রেখে শ্রমিক মজুরি দেওয়ার পরে মার্চ মাসে যখন নতুন চা পাতা তোলার সময় ঠিক সেই সময় থেকেই করোনা আতঙ্কে বাগান বন্ধ করে দিতে হয় নতুন গজানো পাতা গাছেই প্রায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম এবং এই মুহূর্তে বাগান খোলার বা কাজ করার কোনো পরিস্থিতি না থাকায় শ্রমিকদের কাজ করানো এবং মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশাল ঘাটতি দেখা দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ এই মুহূর্তে শ্রমিকদের মজুরি পর্যন্ত দিতে পারছে না।চিত্রটা কোন একটি বা দু’টি জেলার নয় চিত্রটা নির্দিষ্ট কয়েকটি বাগানের নয় , এই পরিস্থিতি সার্বিক উত্তরবঙ্গের চা বাগান গুলির।

বিভিন্ন চা বাগানের চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এই মুহূর্তে যা বোঝা গিয়েছে অবিলম্বে সরকারি স্তরে হস্তক্ষেপ না করা হলে এই বাগান গুলোর ‌মৃত্যু-মিছিল রোখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।