রাজ্য

চন্দন নগরের গোন্দলপাড়া জুটমিলের শ্রমিকদের কাজ নেই, অভাব ও দুশ্চিন্তায় মৃত্যু,


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:৭ই ফেব্রুয়ারি:–চলছে মৃত্যু মিছিল _ পর পর মৃত্যু ঘটছে চন্দন নগরের গোন্দলপড়া জুটমিলের শ্রমিকদের।৪৮ ঘন্টা আগে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় ব্যাচিং বিভাগের শ্রমিক তারক ঠাকুরের ।। ৪৮ ঘন্টাও পেরলো না তেজনারায়ন যাদব মারা গেলেন যার বাড়ী তে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী এবং ছ’টি ছেলেমেয়ে।।বড় ছেলের বয়স মাত্র ৬ বছর আর ছোট মেয়ে জানতেই পারলো না বাবা কি রকম হয়??? প্রতিদিন চা বাগান শ্রমিকদের মৃত্যু হচ্ছে তেমনি করে প্রতিদিন চন্দন নগরের গোন্দলপাড়া জুটমিলের শ্রমিকদের মৃত্যু অবধারিত হয়ে উঠেছে।।এখন পর্যন্ত ২১ জন শ্রমিক মারা গেছেন।।

গোন্দলপাড়া জুটমিলে কাজ নেই তাই অন্য জুটমিলে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন।। অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে রাতে বুকে ব্যথা শুরু হয়।। হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ঘটেনি।তার আগেই শ্রমিক মহল্লার বাড়ি তেই প্রান হারান তেজনারায়ন যাদব।। এই সংবাদ পেয়ে শ্রমিক মহল্লায় যান সিআইটিইউ নেতা রতন ব্যানার্জি।। তাঁর কথায় জানা যায় মিল বন্ধ তাই শ্রমিকদের বিভিন্ন জায়গায় ছুটতে হচ্ছে কাজের জন্য।।সংসার চালানোর জন্য অমানুষিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে।। তরতাজা যুবক তেজনারায়ন।। বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।।। মানসিক দুশ্চিন্তা আর চাপ সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছিল।। শরীরে অপুষ্টির ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।। লোকসভা নির্বাচনের সময় ৮ইমে মিল বন্ধের নোটিশ ঝোলানো হয়।।

যেহেতু মিল মালিক শাসকদলের ঘনিষ্ঠ তাই শ্রমিকদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে শাসকদলের দলীয় কার্যালয়ের উপর।। এরপর শাসকদলের চাপে এবং দলীয় হস্তক্ষেপ মিল খুলতে বাধ্য হয় মিল কর্তৃপক্ষ ।। কিন্তু তারপর ২৭ শে মে মিল বন্ধ হয়ে যায় আর খোলেনি।। অপুষ্টি গ্রাস করছে শ্রমিক মহল্লা কে।।হয় অসুস্থ হয়ে না হয় মানসিক চাপ এ মৃত্যু ঘটছে শ্রমিকদের।। মিল বন্ধ এর কারণ এ সংসার চালানো খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল।।৬ জনের ছাপোষা সংসার আর এই সংসার চালাতে নানারকম কাজ করতে হয়।। আর্থিক বোঝা দিনের পর দিন বাড়ছিল।। মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে হৃদরোগ এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তেজনারায়ন যাদব।।

একেরপর এক মিল বন্ধ এবং সরকারি উদাসীনতায় শ্রমিক কুল ভীষণ ভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শ্রমিক দের অভিযোগ মিল বন্ধ থাকার দরুন ইএস আই এর চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ।। স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার।। বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন গুলো যথাযোগ্য সাহায্য নিয়ে পরিবার গুলোর পাশে দাঁড়াচ্ছে কিন্তু সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই।। আর্থিক সঙ্কট তাদের এতটাই বিপদে ফেলেছে যে তারা আত্মহত্যা পথ ধরেছে।।এই চন্দন নগর এ প্রচুর পরিমাণে টাকা খরচ করে সরকারি উদ্যোগে শ্রমিক মেলা ও বিধান সভা মেলা হয়।। শ্রমিক দের মৃত্যু মিছিল দেখে বিধায়ক, সংসদ ও স্থানীয় পৌরসভার কোন ভূমিকা নেই।।সিআইটিইউ নেতা রতন ব্যানার্জি ও হীরালাল সিং অবিলম্বে মিল খোলার দাবি জানান এবং সরকার ও মিল পক্ষ কে শ্রমিক দের কাজের ব্যাবস্থা করার দাবি জানান।। একসঙ্গে তারা যাতে ইএস আই পরিষেবা পান তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।।।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।