রাজ্য

বারুদের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ


সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:১৭/০৫/২০২৩:- আগুনের স্তুপের উপর দাঁড়িয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ । রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে প্রায়ই শোনা যায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ আর তাতে মৃত্যুর সংখ্যা কিছু কম না । এবারের ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরাতে। যেখানে শব্দ বাজী একেবারেই নিষিদ্ধ সেই রাজ‌্যে এভাবে ভয়ঙ্কর শব্দ করে বিষ্ফোরন ঘটে গেল একটি বাজী কারখানায় আর তাতে প্রায় নয় জনের ছিন্নভিন্ন হয়ে দেহাংশ বিভিন্ন দিকে পুকুর নালায় ছড়িয়ে পড়লো ঐ অঞ্চলের মানুষের শুধু নয় গোটা পশ্চিমবঙ্গের মানুষই বিমূঢ় হয়ে গেছেন ।

পশ্চিমবঙ্গে অনুমোদন প্রাপ্ত বাজি কারখানা আছে মাত্র একুশ খানা । বাজি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা জানিয়েছেন যে এখন শব্দবাজি তৈরীতে নিষেধাজ্ঞা আছে — সাধারণ ভাবে ফুলঝুড়ি ,রংমশাল ,চরকি , তুবড়ি এই সব বাজী তৈরী হয় বলে জানান এক বাজী প্রস্তুতকারক । এই বাজী তৈরীতে এভাবে বিষ্ফোরণ কোন ভাবেই হতে পারে না বলে মত ঐ বাজী কারিগরের । তিনি জোরের সঙ্গে জানান ঐ কারখানাতে নিশ্চিতভাবে শব্দ বাজী বা অন্য কোন ভয়ঙ্কর জিনিস তৈরি করা হতো । পশ্চিমবঙ্গে লাইসেন্স প্রাপ্ত বাজির কারখানা আছে মাত্র একুশ টি যার মধ্যে হুগলি র জনাই তে আছে দুটি এছাড়া বর্ধমান ,হাওড়া,দক্ষিন চব্বিশ পরগনা ইত্যাদি জেলায় । এখানেই সবথেকে বড়ো প্রশ্ন হঠাৎ এগরা তে এমন একটা বাজির কারখানা চলতো কি করে ?? সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন । এর আগেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি জানান যে নির্দিষ্ট ঐ কারখানা টিতে আগেও এ ধরনের বিষ্ফোরণ ঘটেছে ।তার থেকেও আরও ভয়ঙ্কর কথা পুলিশ এই ব্লাস্টের ঘটনাতে তদন্ত করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের প্রচন্ড রোষানলে পড়েন।

গ্রামবাসী রা সোচ্চারে জানিয়েছেন যে পুলিশ প্রসাশন সব জানতো এই বিষয়ে । তাঁদের বক্তব্য এই বাজি কারখানা থেকে নিয়মিত ভাবে উৎকোচ পেত পুলিশ এর ছোট বড়ো প্রায় সবাই । পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই বেআইনি বাজি কারখানার বিষ্ফোরণের ফলে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। মৃতদের দেহাংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে পুকুরে ,মাঠে ,ঘাটে গিয়ে পড়ছে । এই রকম ভয়ঙ্কর কান্ড কোন সাধারণ বাজি কারখানায় ঘটা অসম্ভব বলেই বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা ।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষ্ফোরণে রাজনৈতিক কারণ খুঁজে পেয়েছেন । তিনি জানান যে ঐ বাজি কারখানা যার বাড়ীতে ছিল তার নাম ভানু বাগ । মুখ্যমন্ত্রী আর ও জানান যে ঐ বাজি কারিগর ওড়িষ্যা রাজ্যে পালিয়েছে ।প্রশ্ন টা এখানেই — মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য তে স্পষ্ট যে তিনি জানতেন ঐ অঞ্চলে একটা বাজি কারখানা ছিল যা বেআইনি — এই বেআইনি কারখানা চলতো কিভাবে বা কার মদতে এবং কিসের কারণে? কেন পুলিশ মন্ত্রী বা প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি? যেখানে সকলে জানাচ্ছেন যে ঐ কারখানা তে আগেও এধরনের ঘটনা ঘটেছে — আবারও ঘটলো প্রশাসনের নাকের ডগায় । প্রশাসন নিরুত্তাপ, কিছু অর্থ সাহায্য ঘোষণা করলেই সরকারি দায়িত্ব পূরণ হয় না বলে বিক্ষুব্ধ জনগণের বক্তব্য।



মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।