কাকলি চ্যাটার্জি :চিন্তন নিউজ: ১৪ই এপ্রিল:- ‘নববর্ষের অগ্ৰিম শুভেচ্ছা’টুং করে আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গেই চোখে পড়ে গেল মেসেজটা—ধাক্কা খেলাম, নাড়া দিয়ে গেল চেতনার দরজায়। আপামর বাঙালির ঐতিহ্যের দিন, গর্বের দিন, ভালোবাসার দিন, মানুষের সঙ্গে সম্প্রীতি, সৌহার্দের সুসম্পর্ক গড়ে তোলার দিন দরজায় কড়া নাড়ছে।
চাকুরিজীবী মানুষ কি কোনোদিনও ভাবতে পেরেছিলেন যে এরকম এক দুঃসহ পয়লা বৈশাখের সাক্ষী হতে হবে? এমনই এক সময় যখন সাল, তারিখ তো দূর অস্ত, বারেরও আর আলাদা কোনো মূল্য নেই। শনিবার সপ্তাহের শেষ দিন–পরেরদিন রবিবার–ছুটির আমেজ! সে সব আজ অতীত।
হাতিবাগান, শিয়ালদহ, গড়িয়াহাট, নিউমার্কেট, হাওড়া ময়দান চত্বর—পয়লা বৈশাখের দিন পনেরো আগে থাকতেই পা ফেলার জায়গা থাকতো না কোথাও। থিকথিকে ভীড়; নিত্যযাত্রীর মুখে বিরক্তির রেখা। তার মধ্যেও দোকানদারের হাসিমুখ, মা বাবার হাত ধরে শিশুদের নতুন নতুন জামার ঘ্রাণ নেওয়া, ভীড়ে ঠাসা ট্রেন বাসে উঠে জামার প্যাকেট আঁকড়ে বুকে ধরে রাখা, ‘সব পেয়েছি’র মত খুশি ভরা চোখমুখ আজ স্মৃতির পাতায়। নববর্ষের প্রভাতফেরি, দোকানে দোকানে হালখাতা, নতুন ক্যালেন্ডারের গন্ধ, মিষ্টির দোকানে লাইন দেওয়া, কোথাও বা সন্ধ্যায় বৈঠকি আড্ডা— কত সুন্দর ছিল দিনগুলো।
তবুও মানুষ আশাবাদী। বিশ্বাস আছে হার না মানা লড়াইয়ে ছিল, আছে। বিজ্ঞানের কাছে, চিকিৎসাশাস্ত্রের কাছে পরাজিত হবে করোনা মহামারী, মানুষ আবার ফিরবে তার পরিচিত ছন্দে, নিত্যদিনের ইঁদুর দৌড়ে খুঁজে নেবে নিজেকে।