বিদেশ

সাংহাই এর নিকটবর্তী আকাশে মার্কিন যুদ্ধবিমান—-


কাকলি চ্যাটার্জি- চিন্তন নিউজ:২৮শে জুলাই:- চীন জানিয়েছে সাংহাই এর নিকটবর্তী আকাশে একটি মার্কিন যুদ্ধবিমানকে উড়তে দেখা গেছে। সাংহাই থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থান ছিল বিমানটির। আমেরিকান যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসকারী ইউএসএস রাফেল পেরাল্টা বিমানের নীচে ধাওয়া করা চীনা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এই খবর জানিয়েছে বলে চীনের দাবি। হংকংয়ের এক চীনা মর্ণিংপোস্টের (এসসিএমপি) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে পি–৮এ অ্যান্টি সাবমেরিন বিমান এবং একটি ইপি–৩ তাইওয়ান সমুদ্রের মধ্যে ঝুঁকে পড়ে। দক্ষিণ চীন সাগরে নজরদারি চালানোই ছিল মূল লক্ষ্য। চীন-আমেরিকা দুই দেশের মধ্যে কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়া এবং এই আমেরিকার নজরদারি চালানো সম্পর্কে ফাটল ধরাবে এবং উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট।

এসসিএসপিআইয়ের একটি ট্যুইট বলা হয়েছে পি–৮এ বিমানটি সাংহাইয়ের ৭৬.৫ কিমির মধ্যে এসেছিল, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বিমান চীনের মূল ভূখণ্ডে আসেনি। ফুজিয়ানের দক্ষিণ উপকূলে ১০৬ কিমির মধ্যে একটি বিমান এসেছিল। রবিবার রাতে আবারও ট্যুইটারে জানায় ইউএস নেভি পি–৮এ সাংহাইয়ের নিকটে অভিযান চালাচ্ছিল ইউএসএস রাফায়েল পেরেল্টা। সোমবার ভোরে জানায় যে একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং এ পুনরায় পরিচালিত হচ্ছে। ঘটনাক্রমে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি বর্তমানে গুয়াংডং প্রদেশের লেইজহু উপদ্বীপে দক্ষিণ চীন সাগরের কাছে শক্তিশালী গোলাবারুদ সহ একটি ‘লাইভ ফায়ার ড্রিল’ পরিচালনা করছে।

এক সপ্তাহ ধরে চলা মহড়ায় পিএলএ র নৌবাহিনী এবং রকেটবাহিনী পিএলএ বিমান বাহিনী দ্বারা অ্যন্টি-শিফ ও অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট মহড়ায় যুক্ত থাকবে। দক্ষিণ চীন সি স্টাডিজ এর জাতীয় ইনস্টিটিউটের সভাপতি ওয়াং শিকুন বলেছেন,”এটি (মার্কিন) চলতি বছরে এ পর্যন্ত ছয়টি ফ্রিডম অফ নেভিগেশন অপারেশনস পরিচালনা করেছে। তুলনায় ২০১৭ সালে ৪ বার,২০১৮ তে ৬ বার এবং ২০১৯ এ ৮ বার অপারেশন চালিয়েছিল। থিঙ্ক ট্যাঙ্কের মতে, মার্কিন বিমানবাহিনী ই–৮ সি নজরদারি বিমানগুলো গত সপ্তাহে চারবার গুয়াংডং প্রদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় সীমানার ১৮৫ কিমির মধ্যে অভিযান চালায়। এই মূহুর্তে মার্কিন সামরিক বাহিনী দক্ষিণ চীন সাগরে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচটি বিমান পাঠাচ্ছে। থিঙ্ক ট্যাঙ্কটি আরও জানায় মার্কিন সামরিক বিমানগুলো গত এপ্রিলের পর থেকে বেশ কয়েকবার মূল ভূখণ্ডের আকাশসীমার কাছাকাছি এসেছে। এ প্রসঙ্গে এনআইএসসিএস এর ওয়াং লিখেছেন যে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দুর্ভাগ্যবশত ট্রিগার হওয়ায় সম্ভাবনা বাড়ছিল।” আমেরিকা দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক অভিযান বাড়ানোর সাথে সাথে চীন উপযুক্ত পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যেমন ট্র্যাকিং ও মনিটরিং এর মতো সতর্কতা। মার্কিন সেনা অভিযান যত বৃদ্ধি পাবে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা তত বাড়বে। চীনের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চেঙ্গদুতে অবস্থিত মার্কিন কনস্যুলেটটি সোমবার সকালে বন্ধ হয়ে যায় দু ঘন্টার নোটীশে। অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী বিশ্বের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় মার্কিন দেশে হিউস্টন কনস্যুলেটটিও বন্ধ।

চীন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে এক প্রশ্ন চিহ্নের সম্মুখীন। হয় তাদের মধ্যে সন্ধি চুক্তি করতে হবে নতুন দিনে দিনে মতান্তর বৃদ্ধি এক অন্য আশঙ্কার জন্ম দেবে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের সমরসজ্জা এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধজাহাজ আমেরিকার ভীতি উদ্রেকের কারণ। এছাড়া চীনের টেলিযোগাযোগ কোম্পানি হুয়াওয়ের আধিপত্য আমেরিকা মানতে নারাজ। তারা আর এই কোম্পানির প্রযুক্তি ব্যবহার করবে না, বন্ধুসুলভ রাষ্ট্রগুলোর কাছেও এই আবেদন জানিয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও কলাকৌশল চীনকে উন্নতির শীর্ষে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে। আমেরিকা চীনকে কোণঠাসা করতে চাইলেও অর্থনৈতিক অগ্ৰগতি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আগামী দিনে চীন অবশ্যই বিশ্বের অর্থনীতির নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠবে সন্দেহ নেই।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।