কলমের খোঁচা

কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিবসে শ্রদ্ধা


মিতা দত্ত:চিন্তন নিউজ:১৯শে জানুয়ারি,২০২১:—- “আমি মনে করি,   কেউ কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো না পড়লে আধুনিক যুগে তার বাস করাই উচিত নয়।”– সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

বইয়ের পোকা মানুষটি ছাত্রাবস্থাতেই কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো পড়ে ফেলেছিলেন। তাই তিনি ছিলেন আদোপান্ত বামপন্থী ।শুধু পড়াশোনা নয়, কলেজে ছাত্র থাকাকালীন ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দেন ।ছাত্রদের সব আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। শিক্ষকদের সঙ্গে মাষ্টারমশাইদের সাথে আন্দোলনেও ছিল ওঁর সক্রিয় উপস্থিতি।তাই আমরা পাই উদয়ন পন্ডিতের মতো বলিষ্ঠ অভিনয়ে,  পাই আতঙ্কিত হয়েও প্রতিবাদ থেকে সরে না আসার মতো বৃদ্ধমাষ্টারমশায়কে। ওনার জীবনদর্শন আমাদের আন্দোলিত করে, চেতনায় সজোরে আঘাত করে।

ছোটোবেলা থেকে নাটকের অর্থাৎ অভিনয়ের প্রতি ছিলো ওনার অমোঘ টান। এই ভালোভাসাই ওনাকে অভিনয় জগতে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা এনে দিয়েছিলো।সিনেমা নাটক ছাড়াও বাংলার সাংস্কৃতিক জগতের কোণে কোণে কর্মবীর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বিচরণ করতেন যা সর্বজনবিদিত।

এই সর্বজনশ্রদ্ধেয় মানুষটির আজ জন্মদিন। জীবনের নানা রঙীন বসন্ত পেরিয়ে সকলের মণিকোঠায় স্থায়ী আসন লাভ করেছেন। বাবা ছিলেন হাইকোর্টের উকিল।বাবার বদলির চাকরী হওয়ায় কৃষ্ণনগরে জন্ম হলেও বারাসাত , হাওড়া,  দার্জিলিং ও অবশেষে কলকাতায় স্থায়ী বসবাস ।দার্জিলিং থাকাকালীন তিনি প্রকৃতি প্রেমিক হয়ে পড়েন। এই প্রেম তাঁকে এতটাই মাতিয়ে রেখেছিলো যে, সিলেবাস কেন্দ্রিক পড়াশোনার   প্রতি তিনি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ওনার কথায়, ওই রকম পাহাড়ি পরিবেশ প্রকৃতির মধ্যিখানে বসে কি আর লেখাপড়া হয়?

কলকাতা ছিলো তাঁর যৌবনের উপবন , বার্ধ্যকের বারাণসী ।কলকাতার সাহিত্যপ্রেমী হৃদয়, অভিনয় প্রেমী হৃদয় সর্বত্রই ছিলো তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ।মঞ্চে ও পর্দায় তিনি সমান পারদর্শী। উনি ওনার ব্যক্তি জীবনে ও অভিনয় জীবন “ফাইট ” দিয়ে শিখিয়ে গেলেন,  ফাইট,  কোনি ফাইট। আসলে জীবনযুদ্ধে আমরা সবাই এক একজন কোনি। তাই ফাইট করেই এগোতে হবে। তাই মনে হয় সৌমিত্র নেই কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি আছেন,থাকবেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।