চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ: ২০/১০/২০২২:– বিপ্লবী ভূপেশ গুপ্তের জন্ম ১৯১৪সালের ২০শে অক্টোবর ব্রিটিশ অধীনস্থ অবিভক্ত ভারতের ময়মনসিংহ জেলায়। কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম সংগ্রামী নেতা ছাড়াও তিনি ছিলেন বিশিষ্ট সাংসদ। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল বিপ্লবী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে।১৯৩০-৩১ সালে বিপ্লবী কার্যকলাপের ফলে পুলিশের হাতে ধরা পরে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত জেলবন্দি জীবন কাটান। পরবর্তীতে অন্তরীণ অবস্থায় আইএ ও বিএ পাশ করেন। মুক্তির পরে লন্ডণ থেকে আইনে স্নাতক ও পরে ব্যারিস্টারি পাশ করে ১৯৪১ সালে ভারতে ফিরে কমিউনিস্ট পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হন। পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টি নিষিদ্ধ হলে সেই উত্তাল সময়েও তিনি আত্মগোপন করে চালিয়ে যেতে থাকেন রাজনৈতিক কাজ। ১৯৫১সালে দমদম জেলে বন্দি থাকাকালীন রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন। কমিউনিস্ট পার্টির জাতীয় পরিষদ ও কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ছিলেন তিনি।
শৈশব থেকে তিনি পরিণত হয়েছিলেন কমিউনিস্ট রাজনীতির আইকনে যাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমে। তাঁর জীবন নিবেদিত ছিল মানুষের মুক্তির সংগ্রামে, যে সংগ্রামী জীবনের অবসান ঘটেছিল ১৯৮১ সালে সমাজতন্ত্রের আদর্শে দীক্ষিত অধুনালুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজধানী মস্কোতে। শুধুমাত্র দেশের কমিউনিস্ট আন্দোলন নয় আন্তর্জাতিক স্তরেও এই আন্দোলনের এক বিশিষ্ট ব্যাক্তিত্ব ছিলেন কমরেড ভূপেশ গুপ্ত। মস্কোতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কার্স পার্টিগুলোর আন্তর্জাতিক অধিবেশনেও প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
সমাজতান্ত্রিক মনোভাবাপন্ন বুদ্ধিবৃত্তি ও চিন্তাভাবনার চর্চাই হোলো বাম রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। অকৃতদার ভূপেশ গুপ্ত জীবন উৎসর্গ করেছিলেন কমিউনিস্ট আন্দোলন কে গতিশীল রাখতে। কাজ করেছেন মানবতা ও শোষণমুক্তির লক্ষ্যে। এই কারণে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন দেশ থেকে দেশান্তরে। তাঁর স্মৃতি, তাঁর আদর্শের মোড়কে শিক্ষা সবই মিশে আছে কমিউনিস্ট আন্দোলনের ইতিহাসের পাতায় পাতায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন প্রজন্মের কাছে পাল্টে গেছে নীতিবোধের সংজ্ঞা। শিক্ষার ক্ষয়িষ্ণু মান হরণ করেছে বাকস্বাধীনতা, তাদের স্বাধীন চিন্তার ক্ষমতা। এই পরিপ্রেক্ষিতে কমরেড ভূপেশ গুপ্তের মতো বিপ্লবী ও উদারমনষ্ক ব্যক্তি তাদের চিন্তার জগতে হতে পারেন আলোকবর্তিকা স্বরূপ।