কল্পনা গুপ্ত, চিন্তন নিউজ- মনে পড়ে ৫ ই মে, ২০২০, এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা। ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিকের ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু। এরা সকলেই মধ্যপ্রদেশের। রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছিলো, মালগাড়ির চালক শেষ সময়ে ট্রেন থামানোর চেষ্টা করেও থামাতে পারেন নি।
২০১৯-২০২০ বছরে রেল দুর্ঘটনায় কোন মৃত্যু ঘটেনি জানিয়েছে ভারতীয় রেল। রেল দপ্তরের এই দাবিকে প্রশ্নের মুখে তুলে ধরেছেন সরকারি নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত। তিনি বোর্ডকে এই মর্মে চিঠি দেন যে, মুম্বাইতে প্রতি বছর রেল দুর্ঘটনার জন্য বহু মানুষের মৃত্যু ঘটে। কিন্তু এ বিষয়ে ভি কে যাদব আজ বলেন,” এটা সত্যি যে ২০১৯-২০২০ বছরে রেল দুর্ঘটনায় কোন মৃত্যু হয়নি।” তিনি আরো জানান, চলন্ত ট্রেনের সামনে এসে পড়া বা ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া, এইধরনের সমস্ত মৃত্যুর রেকর্ড তারা আলাদা করে রাখেন। একথা স্বীকার করা হয়, বিগত তিন বছরে এই ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য ২৯ থেকে ৩০ হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছে। এই তথ্য নীতি আয়োগের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ভিকে যাদব।
তবে মনে রাখতে হবে কোন সরকারি দপ্তরের কাজকর্ম শুধু রেকর্ড রাখা আর বিজ্ঞপ্তি জারির মধ্যেই থেমে থাকে না। পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর মতন আরেকটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছিলো ২০১৮ এর দশেরা উৎসবের দিন। রেললাইনের নিকটেই রাবনের পুত্তলিকা দাহ করার সময়ে অনেক মানুষের ভীড় হয়েছিলো, এই সময়ে আচমকা দু’দিক থেকে ট্রেন এসে পড়ায় প্রায় ৬০জনের এতে মৃত্যু ঘটে।
বিশ্বের এক অন্যতম রেলপথ পরিবহন ব্যবস্থা যা ভারতে তিলে তিলে গড়ে উঠেছে সেই দপ্তর বেসরকারিকরণ করার উদ্দেশে কর্মী ছাঁটাই, কাজের অত্যাধিক চাপ কর্মীদের উপরে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ক্রমশ এক অস্থিরতার সৃষ্টি করছে রেল কর্মীদের মনে। ফলে রেল দপ্তরের মত একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংগঠিত ক্ষেত্র আজ কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতির জন্য অত্যন্ত সংকটের মুখে। ফলে ঘটছে বহু দুর্ঘটনার মতো বিষয়।