সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ: ১৩ই মে:-পশ্চিমবঙ্গ দিনের পর দিন তার গরিমা হারাচ্ছে, এক অদ্ভুত রাজ্যে পরিণত হচ্ছে দিনের পর দিন।।। এখন পুরো বিশ্বের সাথে ভারতবর্ষও তার রাজ্যগুলি এক মারাত্মক ভাইরাস সংক্রমণের কবলে।। পুরো বিশ্বের প্রতিটি মানুষ লড়াই করছে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে।। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার বার্তা দিয়েছে শুধু টেস্ট করার ও মৃত্যুর সংখ্যা ঠিকঠাক বলতে।। আর এখানেই মুশকিল হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের সরকারের।। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ক্ষমতার রূপ দেখলো।।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের তথ্য প্রথম থেকেই জনসমক্ষে প্রকাশ করছিলেন না।। এই পরিস্থিতিতে স্বচ্ছতা সবথেকে বেশী প্রয়োজন।। আর এই কাজটিই করছিলেন স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমার।। করোনা সংক্রমণের সঠিক তথ্য দিতে সক্রিয় হয়েছিলেন।। কিন্তু তাঁর কাজ মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ হলো না বলেই মনে হচ্ছে। কাজেই বিবেক কুমারকে বদলি হতে হলো।। তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। কেন তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরানো হলো তা নিয়ে নবান্ন কোন রকম কথা বলেনি কিন্তু বিবেক কুমার বিদায় বেলায় তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।।
বিদায়ী স্বাস্থ্য সচিব বলেন, যে সবাই জানে যে পশ্চিমবঙ্গের করোনা সংক্রমণ নিয়ে তথ্য গোপন করা হয়েছে।। তিনি বলেন যে তিনি অত্যন্ত মানসিক যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন কারন এই করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা নিয়ে।। তিনি আরও বলেন যে তাঁর এই তথ্য তুলে ধরার জন্য হয়তো সরে যেতে হবে কিন্তু পিছপা না হয়েই গত দু’সপ্তাহ ধরে বুলেটিনে সঠিক তথ্যটাই দেওয়া শুরু করেছিলেন।। আর তাঁর এই কাজের জন্য তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে পরিবেশ দপ্তরের সচিব পদে নিয়োগ করা হয়েছে।।
পশ্চিমবঙ্গে ১৭ ই মার্চ প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে আর লকডাউন শুরু হয় ২৩ শে মার্চ।। প্রথম থেকেই অগ্রাধিকার ছিল স্বাস্থ্য ও রেশন ব্যবস্থাতে।।। এই দুই ক্ষেত্রেই তৃণমূল কংগ্রেস সরকার যে চুড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ তা প্রমাণ হয়েছে দুই দপ্তরের সচিব বদল ।। শীর্ষ আধিকারিক এর উপর দায় চাপিয়ে রেশন ব্যবস্থাতে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য তাঁকে বদলি করা হয়।। সেদিন অন্তত সরকার জানায় যে কেন ১০% লোক রেশন পায়নি তা খতিয়ে দেখার জন্য নতুন সচিব নিয়োগ করা হয়েছে।। কিন্তু বিবেক কুমারকে বদলি করা নিয়ে নবান্ন একটি কথাও খরচ করেনি।।
অথচ করোনা সংক্রমণে মৃত্যু ও আক্রান্ত হওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সরকার মোটেও চিন্তিত নন।। বরং তাঁর কথা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা আজ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি ভালো।। স্বাস্থ্য সচিব বদলের সময় তিনি গর্বের সাথে তাঁর দপ্তরের প্রশংসা করতে ছাড়েননি।। তিনি বলেছেন তাঁরা ক্ষমতাতে আসার পর থেকে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তুমুল উন্নতি হয়েছে যা আগে মানুষ ভাবতেই পারতেন না।। কিন্তু এত যখন উন্নতি তাহলে এই করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে কেন সচিব বদল তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি মুখ্যমন্ত্রী।