জেলা দেশ রাজ্য

কয়লা শিল্প বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে পাঁচটি ট্রেড‌ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিন


সুকৃতীশ নন্দী: চিন্তন নিউজ:৩রা জুলাই:-২রা জুলাই, চিন্তনের নিজস্ব সংবাদদাতা হাজির ছিলেন আসানসোলের কয়লাখাদান অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায়। উদ্দ‍্যেশ‍্য ছিলো খনি শ্রমিকদের পাঁচদফা দাবীর ভিত্তিতে তিনদিনের ধর্মঘট সরেজমিনে দেখে নেওয়া। অদ্ভুত এক মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল খনি অঞ্চলগুলি থেকে। বিভিন্ন এলাকার বিস্তারিত রিপোর্ট নীচে দেওয়া হলো:-

নরসমুদা :- কারখানার গেট পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করা হলো। সিকিউরিটি পার্শোনাল ছাড়া আর কারোর দেখা পাওয়া গেলো না। জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেলো উপস্থিতির সংখ্যা ১৬৫ জন কর্মচারীর মধ্যে কাজে এসেছেন মাত্র ৩৫ জন। যদিও যারা উপস্থিত হয়েছেন তারা প্রত‍্যেকেই ইমার্জেন্সি ডিউটিতে আছেন। কারখানার গেটে ট্রেড ইউনিয়নের পতাকা লাগানো।

পাটমোহনা: – এখানে আন্দোলনকারীদের অনেকে উপস্থিত ছিলেন যদিও তারা কাজে যোগদান করেন নি। ধর্মঘটের সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছিলেন। ধর্মঘটের ঝাঁঝ বেরিয়ে এলো তাদের কথাবার্তায়। অদম‍্য জেদ কাজ করছে তাদের মধ্যে। এই একটি বিষয়ে সেখানে সব ট্রেড ইউনিয়ন এক। প্রশ্ন করায় তাদের উত্তর ‘সরকার যতদিন না তাদের নীতি বদলায় ততদিন তারাও আন্দোলন থেকে সরে আসছে না। এখন প্রতীকি তিনদিনের ধর্মঘট, প্রয়োজনে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন।’ বোঝা গেলো আগামীদিনে এক কঠিন লড়াইয়ের রূপরেখা তৈরী হচ্ছে।

চিনাকুড়ি :- এখানকার ১এবং‌‌ ২ নং কোলিয়াড়ীর মোট ১০৫ জন সদস‍্যের মধ্যে কাজে যোগদান করেন ৯২ । সেখানকার বেশিরভাগ সদস্য‌ই তৃণমূল পরিচালিত কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেসের সদস্য। সংগঠনের নেতা রামাশিষ যাদব কী বললো শুনুন, “আমরা এই ধর্মঘট মানছি না। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে আবার ধর্মঘটের‌ও বিরুদ্ধে। কারন আমাদের দিদি অর্থাৎ মমতা ব‍্যানার্জী বলে দিয়েছেন এবং তাদের শ্রমিক নেতৃ দোলা সেন‌ও ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। ” চিন্তনের সংবাদদাতা তাদের বোঝান ধর্মঘটের বিরুদ্ধে কথা বলা মানে কেন্দ্রীয় সরকারের হাত মজবুত করা। কিন্তু তারা বলেন আমাদের ওপরের নির্দেশ, ধর্মঘট করা যাবে না। অর্থাৎ কয়লা শিল্পে বেসরকারী করন তারা একপ্রকার মেনে নিচ্ছেন।

চিনাকুড়ি ৩ নং. – এখানে ২৯০ এর মধ‍্যে উপস্থিত হয়েছেন মাত্র ৩৫ জন। গেটে একমাত্র চারজন সিকিউরিটি পার্সোনাল ছাড়া আর কেউ কোত্থাও নেই। সিকিউরিটি পার্সোনালের কাছ থেকেই বিশদে জানা গেলো। তারাও ধর্মঘটের পক্ষে কিন্তু জরুরী কাজের ভিত্তিতে তাদের কর্মক্ষেত্রে আসা।

মূলত যে পাঁচদফা দাবীর ভিত্তিতে তাদের ধর্মঘট তা নিচে দেওয়া হলো-
১.কোল মাইন্স স্পেশাল প্রভিশন এক্ট ২০১৫ বাতিল করা।
২. ৪১ টি কোল ব্লকের নিলাম বন্ধ করা।
৩. আউটসোর্সিং বন্ধ করা।
৪. ঠিকা প্রথা রদ করা।
৫. পরিবেশ ধ্বংসকারী, মানুষ ও পশুপাখির বসতি উচ্ছেদকারীর সমস্ত কয়লাখনি প্রকল্প বাতিল করা।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।