চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ:৩১শে জুলাই:- নতুন সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মহামারীর প্রভাবে জার্মানির অর্থনীতিতে রেকর্ড পতন ঘটেছে। এবছর এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে পণ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে ১০.১%। মনে করা হচ্ছে ১৯৭০ সালের পর জার্মান অর্থনীতিতে এটাই সবচেয়ে বড় ধাক্কা। এই তথ্য এমন একটা সময় প্রকাশিত হয়েছে যখন সমগ্র ইউরোপ মহামারীর দ্বিতীয় ধাক্কায় পড়তে চলেছে।
ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবেই এবছর পর পর দুটি কোয়ার্টারেই জিডিপি কমেছে বলে দেখা যাচ্ছে। এপ্রিল মাস থেকেই দেখা যাচ্ছে এই পতন। এবছর প্রথম কোয়ার্টার থেকেই (জানুয়ারি-মার্চ) জিডিপি কমেছে ২.২%, যা ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের সঙ্গে তুলনীয়। এছাড়া গতবছর চতূর্থ কোয়ার্টার-এ জিডিপি০.১% কমেছে,যা এবছর দ্বিতীয় কোয়ার্টার থেকে আরও কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অবস্থায় অর্থনীতিবিদরা দ্বিতীয় কোয়ার্টার-এ জিডিপি ১০% পর্যন্ত কমতে পারে বলে আশঙ্কা করছে। অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী শেটার আন্টমায়ার বলেছেন ইতিমধ্যে শিথিল হতে শুরু করেছে অর্থনৈতিক বিধিনিষেধ ফলে গতি ফিরছে ধীরে ধীরে। পুঁজি অর্থনীতিবিদ এ্যান্ড্রু কেনিংহাম জানিয়েছেন চলতি বছরের তৃতীয় ভাগে জিডিপি কিছুটা বৃদ্ধির আশা করলেও তা প্রাক সংকটের নীচেই থাকবে। ২০২০ সালে জার্মানির জিডিপি ৬.৬% পর্যন্ত কমার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যান্য দেশের মতোই মহামারীকালে জার্মানির অর্থনীতি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল। ঠিক এই সময়ে যেসব বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছিল তা প্রচন্ড আঘাত হেনেছিল এখানের অর্থনীতিতে। পরিসংখ্যানে জানা গেছে যে মাহামারীকালীন বিধিনিষেধ, দেশজুড়ে কড়াকড়ি, দেশের আমদানি রপ্তানিতে গভীর প্রভাব ফেলে। শিল্পজাত পণ্য রপ্তানিকারক দেশগুলির মধ্যে শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে জার্মানি। ফলে মহামারীর কারণে একদিকে বাণিজ্য মন্দা ও অপরদিকে ব্রেক্সিট ও চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে রপ্তানির বরাত ৯% কমে যায়, যা ১৯৯১ সালের পর সর্বোচ্চ।
অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে জার্মানির সরকার দেশের সবধরণের কোম্পানির জন্যে ১১০ কোটি ডলার ঋণের ব্যাবস্থা করেছে। এছাড়াও দেওয়া হচ্ছে আর্থিক ছাড়, সহজ করা হচ্ছে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা, ছাড় দেওয়া হচ্ছে জরিমানাতেও। আশা করা হচ্ছে এই সরকারি পদক্ষেপ গুলো অক্সিজেন জোগাবে জার্মানির অর্থনীতিতে।