সূপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:১৬ই সেপ্টেম্বর:- এ এক আজব দেশ! কোন কিছুরই খবর জানে না কেন্দ্রীয় সরকার। কোন সিদ্ধান্ত নিতে কতটা সময় প্রয়োজন সেটাও একেবারে অজানা।। যেমন দেখালো করোনা কাল। ভারতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরুর থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বোধ করলো না। যথেচ্ছ আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল করলো। যখন পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে তখন দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে মাত্র চারঘন্টার নোটিশে একটা দীর্ঘকালীন লকডাউন ঘোষণা করা হল। একবারও সরকার ভাবলো না যারা বাইরে কাজ করতে গেছে তথাকথিত পরিযায়ী শ্রমিকদের অসুবিধার কথা। তাঁরা তাঁদের বাড়িতে ফিরবে কি করে? ইতিমধ্যে তার নিজের বাড়ী, রাজ্য ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে গেছে তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বাসস্থান গেছে। হাতে টাকা-পয়সা যা ছিল খরচ শুরু হয়েছে এবং তা প্রায় শেষ। বারবার তাঁরা আবেদন করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বা যে রাজ্যে তাঁরা কাজের জন্য এসেছেন সেই রাজ্য সরকারকে তাদের বাড়িতে ফেরার বন্দোবস্ত করে দিতে।
শ্রমিকদের দূর্দশার ছবি দেখেছে গোটা দেশ। এবার আরও এক আশ্চর্য জিনিসের সাক্ষী হতে চললো দেশের মানুষ। সংসদে বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছে।। আর করোনা কালে সরকার পক্ষ লিখিত আকারে জানাতেই পারলো না কতজন পরিযায়ী শ্রমিক এর মৃত্যু হয়েছে। লকডাউন চলাকালীন কতজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শ্রম দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে এমন কোন তথ্য তাদের হাতে নেই। মৃতের পরিবারকে কোনরকম ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে শ্রম দপ্তর জানিয়েছেন যে কতজন শ্রমিক মারা গেছেন সেটাই জানা না থাকলে ক্ষতিপূরণ এর প্রশ্ন আসে কোথা থেকে? কতজন শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন তার কোন তথ্য সরকারের কাছে নেই। অথচ বিশ্বব্যাঙ্ক এর এক রিপোর্টে জানা গেছে যে গত ২৫ শে মার্চ থেকে যে অপরিকল্পিত লকডাউন পরিস্থিতি তে ৪০ মিলিয়ন পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর তীব্র খারাপ প্রভাব পড়েছে।। এপ্রিল মাসে যে লকডাউন চলেছে তাতে সবচেয়ে করুণ অবস্থা হয়েছে দিনমজুর,ছোট ব্যবসায়ী এবং হকাররা। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড, ওড়িশা এবং অন্যান্য রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের বিনামূল্যে খাবার ও খাবার জল বিতরণ করা হয়েছে।
এদিকে সুত্র জানিয়েছে যে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে বাড়িতে ফেরার পথে ১১০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও কতজনের মৃত্যু হয়েছে নানারকম দূর্ঘটনা , রাস্তায় খাবার ও জলের অভাবে সেই খবরটাও জানতে পারেনি সরকার।