রাহুল চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ:১৮ই মার্চ:–সুফি সাধক হজরত দাতা মেহবুব শাহ ওলির মাজার বীরভূমের পাথরচাপুরিতে যেখানে রাজ্যের সবচেয়ে বড় উরুস উৎসব পালিত হয়ে থাকে। জনশ্রুতি রয়েছে তিনি তৎকালীন বহু অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছেন এবং মানুষের কাছে “দাতাবাবা” হিসাবেই বেশি পরিচিত হন।। দাতা বাবা মেহেবুব শাহ ওয়ালী(রঃআঃ) তাঁর কর্মের জন্য বিখ্যাত হয়েছেন। তিনি জেলা তথা বাইরের প্রচুর মানুষের হিতের জন্য কাজ করেছেন। জাতি ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সবাই দাতা বাবাকে শ্রদ্ধা করেন।
সেকেড্ডার জমিদার খান বাহাদুর পাথরচাপুরিতে মেলার সংগঠনের সূচনা করেছিলেন। ১৯১৮ সালে তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জে. সি. দত্ত দ্বারা প্রতিষ্ঠিত মাজার রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির প্রথম সভাপতি ছিলেন খান বাহাদুর এবং তারা সরকারিভাবে প্রথম মেলার উদ্বোধন করেন। এককথায় এই মেলাকে সমস্ত ধর্মাবলম্বীদের এক মিলন মেলা বলা চলে।। জেলার অন্যতম ঐতিহ্যমন্ডিত তীর্থস্থান গুলির মধ্যে অন্যতম পাথরচাপুরী দাতাবাবার মাজার। এখানে বাংলার চৈত্র মাসের ১০ তারিখে পবিত্র ঊরুস মেলা উপলক্ষে বিশাল জনসমাগম হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর আগমন ঘটে এই সময়। তবে এ বছর করোনা ভাইরাস ত্রাসের সৃষ্টি করেছে বিশ্বজুড়েই। আর এই সংক্রামক আটকাতে বেশকিছু বিধি-নিষেধ মেনে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সকল বিধিনিষেধ এর মধ্যে অন্যতম জনসমাগম থেকে দূরে থাকা। এর আগে শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসব বাতিল হয়েছে, একের পর এক বাতিল হচ্ছে জনসমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান, এমনকি ক্রিকেট খেলার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা করানোর। তাই প্রশ্ন ছিলই এই পাথরচাপুরি মেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হবে কিভাবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাথরচাপুড়ি মেলা বন্ধের ঘোষনা করলো জেলা প্রশাসন। এবারে এটি ছিল ১২৮তম পাথরচাপুরীর পবিত্র ঊরুস মোবারক ও মেলা। এবারও দেশ বিদেশের প্রায় ৬ লক্ষাধিক ধর্ম প্রান জাতি,বর্ন, ধর্ম মানুষ উপস্থিত হবেন বলে অনুমান করা হচ্ছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে।।
এদিনের বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনার পর মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু, জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জেলাপরিষদের পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিংহ, পাথরচাপুরি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন সামস, মেলা কমিটির সদস্যরা।
পাথরচাপুরি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন সামস বৈঠক শেষে জানান, “আপনারা জানেন এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাগমপূর্ণ সমস্ত রকম অনুষ্ঠান বাতিল করা হচ্ছে। সে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হোক বা অন্য কিছু। আমরা সমস্ত রকম আলাপ আলোচনা করার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবছর পাথরচাপুরি মেলা হচ্ছে না। তবে ধর্মীয় দিকগুলি মানা হবে। মেলা বলতে যা বোঝায় তা হবে না।”