দীপশুভ্র সান্যাল: চিন্তন নিউজ:১৪ই জুলাই:– স্বামীজির মূর্তি বসতে চলেছে জলপাইগুড়ির নদী মোহনায়। দেশের মূল ভূখন্ডে দক্ষিণতম শহর কন্যাকুমারী। সেখানে রয়েছে স্বামী বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়াল। চতুর্দিকে জলরাশি বেষ্টিত রক মেমোরিয়াল দেখতে প্রতিবছর ভীড় জমান বহু পর্যটক। এবার অনেকটা সেই ধাচেই স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি বসতে চলেছে জলপাইগুড়ি শহরে। জেলা হাসপাতাল সংলগ্ন ধরধরা ও করলা নদীর সঙ্গমে স্বামী বিবেকানন্দের পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসাতে চলেছে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি এসজেডিএ-র বোর্ড মিটিংয়ে ধরধরা ও করলার মোহনায় স্বামীজির পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসানোর প্রস্তাব পাশ হয় বলে জানা গেছে।তবে নদীর পাড়ে মূর্তি বসানোর পরিকল্পনা থাকায় সেচ দপ্তরের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই অনুমতির প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে এসজেডিএ সূত্রের খবর।
বৃহস্পতিবার সকালে মোহনা ঘুরে দেখেন এসজেডিএ-র নির্বাহী বাস্তুকার প্রকাশ লামা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। শহর জলপাইগুড়িতে মনীষীদের মূর্তি বসানোর একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ। চলতি মাসের প্রথমদিকে এসজেডিএ-র তরফে উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত সরোজেন্দ্র দেব রায়কতের আবক্ষ মূর্তির স্থাপনা হয়েছে তাঁরই নামাঙ্কিত কলাকেন্দ্রে। এবার স্বামীজির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ও শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য তার মূর্তি বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করছে এসজেডিএ। তবে মূর্তির স্থান নির্বাচনের কারণে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত। নদীবক্ষের চড়ায় এই মূর্তি বসানোর জন্য সেচ দপ্তরের অনুমোদন প্রয়োজন। এর পাশাপাশি নদীর বাস্তুতন্ত্রের বিষয়টিও নজরে রাখতে হবে । বিশেষ কারণে কলকাতায় রয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এসজেডিএ চেয়ারম্যান বিজয় চন্দ্র বর্মণ। এসজেডিএ-র জলপাইগুড়ি দপ্তরের আধিকারিকরা এখনই কিছু বলতে না চাইলেও সূত্রের খবর, চেয়ারম্যান ফিরে এলেই মূর্তি স্থাপনের প্রক্রিয়ার কাজ পুরোদমে শুরু করা হবে। সমাজ ও নদী বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক সঞ্জীব চ্যাটার্জি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এসেছি করলা-ধরধরার সঙ্গমে স্বামীজির মূর্তি বসানোর। এর “প্রারম্ভিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে এসজেডিএ।আধিকারিকরা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে।” তাদের দাবী পূরণ হওয়ার পথে। স্বভাবতই খুশি সঞ্জীববাবু।
অন্যদিকে সিপিআইএমের জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেত্রী দূর্বা ব্যানার্জি অভিযোগ করেন, প্রতিবছর ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে করলা নদীর জল বাড়লে করলার জল ধরধরা নদী দিয়ে ঢুকে প্লাবিত করে বিস্তীর্ণ ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার রবীন্দ্রনগর ভাটাখানা এলাকা। বারংবার এই এলাকায় জল যাতে না দাঁড়ায় তার জন্য পৌরসভা ও সেচ দপ্তরে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানানো হলেও আজ পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হয়নি। শহরের সৌন্দর্যায়ন জরুরী স্বামীজীর মূর্তি ধরধরা করলার মিলনস্থলে বসছে খুব ভালো কথা কিন্তু রবীন্দ্রনগর, সেনপাড়া, ভাটাখানার মানুষরাও ট্যাক্স দেন প্রতিবছর বর্ষায় কেন তাদের ডুবে থাকতে হবে? কেন সেচ দপ্তর করলা,ধরধরা নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি করতে কাজ করবেনা? এই প্রশ্ন প্রশাষনের কাছে তিনি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন দুর্বাদেবী।