দেশ রাজ্য

গাড়ী শিল্পে কাজ হারাবার মুখে ১০ লক্ষ শ্রমিক


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ২৬ জুলাই: কাজ হারাবার মুখে গাড়ী শিল্পের প্রায় দশ লক্ষ শ্রমিক। গত বেশ কয়েকবছর ধরে দেশে বিপুল হারে গাড়ী বিক্রি কমে যাওয়ায় তীব্র সংকটের মুখে পড়েছে এই শিল্প। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক কারখানা আর বন্ধ হওয়ার মুখে অনেকগুলি। ফলে প্রায় ১০ লক্ষ কর্মীর জীবনজীবিকা সংকটের মুখে পড়েছে। এই যে সংকট শুরু হয়েছে এই ব্যাপারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাইল এই শিল্পের মালিকদের সংগঠন এ.সি.এম.এ। ২০১৮-র সেপ্টেম্বর থেকে গাড়ীর যন্ত্রাংশ তৈরীর কারখানাগুলিতে ১০-১৫% কর্মসংস্থান নষ্ট হয়েছে। যদি এই অবস্থা চলতে থাকে তাহলে আগামী দিনে আরও বহু মানুষ কাজ হারাবেন।

অর্থমমন্ত্রককে চিঠি দিয়ে জানান হয়েছে দেশে গাড়ীর চাহিদা তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই শিল্পে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে কেন্দ্রকে। তাদের সরাসরি দাবী আভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। তারা আরও জানিয়েছেন এমন চলতে থাকলে চলতি বছরে অন্তত ১০ লক্ষ কর্মী কাজ হারাবেন।

মোদি সরকারের আমলে গাড়ী উৎপাদন বিপুল হারে কমেছে। এই শিল্পের অন্যতম বড় শিল্প হল পরিবহন শিল্প। আর এই পরিবহন শিল্পে আঘাত আসার ফলে এই শিল্প সার্বিকভাবেই সংকটে। এবছর তা আরও বড় আকার নিয়েছে। কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে এই সংকটের কথা জানিয়েছে এ.সি.এম। সংগঠনের সভাপতি বেঙ্কটরামানি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পরিবহন শিল্পের অবস্থা খুবই খারাপ। সরকারকে এই ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি আরও জানান এই সংকট একদিনে হয়নি। অনেকদিন ধরেই চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে। এবারে তা চরম সীমাতে পড়েছে। গাড়ী শিল্পে যুক্ত আছেন প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রমিক কর্মচারী। তাছাড়া যন্ত্রাংশ তৈরীতে যুক্ত বহু মানুষ। বিক্রির বাজারে মন্দা দেখা দেওয়ার কারণে বহু কারখানা তাদের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে ভান্ডারে যা আছে তা বিক্রি করে দিচ্ছে। এর ফলে উৎপাদন ১৫-২০% কমাতে বাধ্য হয়েছে পরিবহন শিল্প। এই শিল্পে আর কোন বিনিয়োগ আসছে বলে জানিয়েছেন বেঙ্কটরামন।

বর্তমানে গাড়ী শিল্পের সংকটকে আরও তীব্র করেছে ব্যাটারিচালিত গাড়ী। এর জন্য অটো শিল্পের বহু কর্মী কাজ হারাচ্ছেন। ইলেক্ট্রিক গাড়ী দেশে চলতি গাড়ী শিল্পের কোন প্রসার ঘটাবে না। এর ফলে শুধু ইলেক্ট্রিক গাড়ী ও তার যন্ত্রাংশের আমদানি বাড়বে। নতুন শিল্প কিছু হবে না। তাদের দাবি পরিবহন গাড়ীর ক্ষেত্রে সুসংহত নীতি গ্রহন করুক কেন্দ্র।

শ্রম নিবিড় শিল্প বলে পরিচিত গাড়ী শিল্প। শিল্পের যে মন্দা নেমেছে তা আভ্যন্তরীণ চাহিদা কমে যাওয়ার জন্য। দেশের গাড়ী বিদেশেও রপ্তানি হয়। সেই রপ্তানিতেও ভাটার টান। তাই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাইছে গাড়ী শিল্প মালিকরা।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।