দীপশুভ্র সান্যাল,চিন্তন নিউজ: ২৭/১১/২০২৪:- পিকে ছায়াছবির সেই পরিচিত ডায়লগ এবার সরাসরি উপলব্ধি করতে পারলেন মালবাজার শহরবাসী। ভগবানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে রং নাম্বার চলে গিয়েছিলো সোনা বাবার কাছে। সেই ভক্তের কাছ থেকে দামি গাড়ি নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন সোনা বাবা।
সারা শরীর জুড়েই রয়েছে সোনার অলংকার। দামি গাড়ি চড়বার শখও রয়েছে তার। মালবাজার শহরে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন সোনা বাবা বা গুরুজী নামে । মালবাজার শহরের সুভাষ মোড় সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে তার বাড়ি ও দোকান। প্রথম জীবনে ছিল পিসিও বুথ, পরবর্তীতে কাপড়ের দোকান ও ফুলের ব্যবসা করতেন তিনি। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় অনেকের কাছেই তিনি নিজেকে অসীম আধ্যাত্মিক শক্তির অধিকারী বলে দাবিও করতেন।
মূলত সোনা বাবা অর্থাৎ গৌতম রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিদেশে থাকা কোন ভক্তকে ভুল বুঝিয়ে তিনি দান হিসেবে তিনটি গাড়ি নিয়েছিলেন। বিদেশের সেই ভক্ত গাড়ি ফেরত চেয়ে মালবাজার থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। সোমবার বিকেলে পুলিশ দুটি গাড়ী বাজেয়াপ্ত করেছে। সাদামাটা জীবনযাপন থেকে হঠাৎ করে বিলাস বহুল জীবনযাপন শুরু করতেই শহরের আম জনতার নজর পড়ে তার ওপর। সাধারণ তরুণ থেকে হঠাৎ তিনি হয়ে ওঠেন স্বঘোষিত গুরুজী ও সোনা বাবা। তার দাবি, দেশ ও বিদেশ মিলিয়ে প্রচুর ভক্ত তার জন্য দান পাঠান।
এমনই এক ভক্তের দেওয়ার দানকে ঘিরেই হঠাৎ বিতর্কের সূত্রপাত। কলকাতা নিবাসী এক ব্যক্তির মাধ্যমে পরিচয় হয় দুবাইয়ের এক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত প্রবাসী বাঙালি সুজয় শংকর ঘোষের সঙ্গে।
গৌতম রায়ের দাবি, দুবাইয়ের সেই ভক্ত তার বাণী এবং বিভিন্ন ভক্তিমূলক কথায় প্রভাবিত হয়ে উপহার হিসেবে তিনটি গাড়ি দান করেছেন। তিনি মালবাজারে অবস্থিত গাড়ি কম্পানি থেকে গাড়িগুলি গ্রহণ করেছিলেন। তার দাম মিটিয়ে ছিলেন প্রবাসী সুজনশঙ্কর। সম্প্রতি তিনি মালবাজার থানায় স্পিড পোস্ট মারফত চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেছেন, তাকে ভুল বুঝিয়ে দানের নামে তিনটি গাড়ি আদায় করেছেন গৌতম। গাড়ি গুলো ফেরত দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন গৌতমের কাছে। কিন্তু সেই আবেদনে কোন সাড়া দেননি গৌতম রায়। সুজনের অভিযোগের সূত্র ধরেই গৌতমের বাড়িতে তল্লাশি চালায় মালবাজার থানার পুলিশ। দুটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়। গাড়ি দুটির বাজারদর ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকার মধ্যে। মালবাজার থানার পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
সম্প্রতি একটি অডিও ক্লিপিং ভাইরাল হয় সামাজিক মাধ্যমে। সেই অডিও ক্লিপিং এ সুজয়শঙ্কর ঘোষ গৌতম রায়কে ভন্ড বাবাজী বলে দাবি করেছেন এবং সেই অডিও ক্লিপিং তিনি তার ঘনিষ্ঠ মহলে পাঠিয়েছেন।স্থানীয়দের তরফে জানা গেছে, বাবাজি কারো সঙ্গেই বিশেষ কথাবার্তা বলেন না। গৌতম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, যিনি গাড়ি দান করেছেন তিনি নিজে এসেই গাড়িগুলো নিয়ে যেতে পারতেন। পুলিশে অভিযোগ করার কোন প্রয়োজন ছিল না। যদিও গাড়িগুলির চাবি মালবাজার থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি।প্রশ্ন উঠেছে, প্রবাসী ওই বাঙালি তিনটি গাড়ি দান করলেও দুটি গাড়ি ফেরত চাইলেন কেন?অভিযোগকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মালবাজার থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দুটি গাড়ি আটক করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।