তিলক ঘোষঃ- চিন্তন নিউজঃ২৮/০৮/২০২২:– আজ বরেণ্য রম্যলেখক শিবরাম চক্রবর্তীর ৪৩ তম প্রয়াণ দিবসে স্মরণ করি।
শিবরাম চক্রবর্তী (ডিসেম্বর ১৩, ১৯০৩-আগস্ট ২৮, ১৯৮০) ছিলেন এক জন রম্য গল্পকার। শিবরাম মানেই হাসির পটরা। এই মহান গুণী সাহিত্যিক ১৯০৩ সালের ডিসেম্বরে কলকাতায় জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মালদহের চাঁচলের রাজ পরিবারের সন্তান। যদিও ৭৭ বছর বয়সের মধ্যে বেশির ভাগ সময়ই কেটেছে তাঁর ভাগ্যান্বেষণে। এক সময় তিনি জীবিকার তাগিদে সংবাদপত্রের হকারি করেছেন। সেই সময় কলকাতার বিখ্যাত সংবাদপত্র বসুমতী বিক্রি করেছেন। এর পর সওদাগরি অফিসে কম মাইনের চাকরি করেছেন। কিন্তু তখনও লেখা-লেখিতে হাত দেননি। অবশেষে একটা সময় এসে তাঁকে লিখতে হয়। কারণ লিখেই তাঁকে খেতে হয়। দৈনিক বসুমতীর সম্পাদক হেমন্তপ্রসাদ ঘোষই তাঁকে লেখালেখিতে নিয়ে আসেন। সাহিত্যসাধনা শুরু করে তিনি বাংলা সাহিত্যে আলোড়ন তোলেন। রস রচনা এবং কৌতুক রচনায় সিদ্ধহস্ত শিবরাম গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি কবিতাও লিখেছেন। তাঁর উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘প্রেমের পথ ঘোরাল আজ এবং আগামীকাল’, ‘মেয়েদের মন’, ‘ঈশ্বর পৃথিবী ভালবাসা’ প্রভৃতি। আবার তিনি ছোটদের জন্য প্রচুর লিখেছেন। তাঁর এ সব লেখা-লেখি বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান জুড়ে রয়েছে।
ইস্কুলে পড়তে পড়তেই তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন এবং দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের সংস্পর্শে আসেন। এর জন্য তাঁকে কারাবাসও করতে হয়। এই সময় তিনি বিজলী ও ফরওয়ার্ড পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন। ছিলেন যুগান্তর পত্রিকার প্রকাশক। তাঁর জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই কেটেছে কলকাতার মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের একটি মেসবাড়িতে। শেষ জীবনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁর জন্য মাসোহারার ব্যবস্থা করেছিলেন।
তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় নানা ধরনের লেখালিখি করেছেন। কবিতা দিয়ে তাঁর সাহিত্য জীবন শুরু। কিন্তু তাঁর প্রতিভার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রকাশ কিশোর সাহিত্যে। যদিও তাঁর লেখায় ভিড় করে আছে শ্লেষের অলংকার। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র হর্ষবর্ধন, গোবর্ধন, ইতু ও বিনি পাঠকচিত্ত জয় করেছে। ৬০ বছরেরও বেশি সময় জুড়ে ব্যাপ্ত লেখক জীবনে তিনি ১৫০-এরও বেশি বই রচনা করেছেন।