কলমের খোঁচা

আয়ের রাস্তা বন্ধ, বাজার আগুন, গরিব মানুষ খাবে কি?


দেবু রায়:নিজস্ব প্রতিবেন: চিন্তন নিউজ:২৪শে সেপ্টেম্বর:- কোভিড পরিস্থিতিতে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন, আবার অনেকেরই মাহিনা অর্ধেক হয়েছে। অন্যদিকে বাজারে গেলে যেটাই ছোঁবেন , সেটাই ছ্যাঁকা মারে! গরিব মানুষ যে আলু সিদ্ধ ভাত খাবে সেটাও বন্ধ। কারন চল্লিশ টাকায় আলু বিক্রি হয়, অন্য সবজির দাম এতো যে অনেক মানুষ সবজি খাওয়া ভুলতে বসেছে।

বেশিদিন নয় এই গত ফেব্রুয়ারী মাসে আমি হাওড়া স্টেশনের বাইরে চার -পাঁচ টাকা দরে আলু কিনেছিলাম, দোকানদার আমাকে বলেন বাবু পাঁচ কেজি নিন আঠারো টাকায় দেব। অর্থাৎ সাড়ে তিন টাকা প্ৰতি কেজি, কিন্তু কি এমন হলো যে ছয় -সাত মাসের মধ্যে সাড়ে তিন টাকার আলু চল্লিশ টাকা! মনে রাখবেন এই বছর কিন্তু আলুর উৎপাদন চাহিদার থেকে কম হয় নি।

আমাদের রাজ্যে প্ৰতি মাসে চাহিদা থাকে পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টন। আর হিমঘরে মজুত প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। আমরা কি দেখছি, সরকারের বহুল প্রচলিত টাস্ক ফোর্স , কিন্তু কি করছে তারা ?. যাচ্ছে বাজারে সেটা মানিকতলা বা ভবানীপুর যাই বলুন, সেখানে যে লোকটি তিনশো বা চারশো কেজি আলু পাইকারি কিনে খুচরো বিক্রি করছে তাঁদের ধমকি দিচ্ছেন বা চমকাচ্ছেন। আলুর দাম কি ওনারা বাড়াচ্ছেন?. না আসল অপরাধী তো হিম ঘরের মালিক যারা মজুত করে বাজারে কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করে মুনাফা করছে। আচ্ছা কোনো দিন কি দেখেছেন টাস্ক ফোর্স কোনো হিমঘরে হানা দিয়েছে?. না দেখাতে পারবেন না। কোনো দিন কি দেখাতে পারবেন যে সমস্ত মিডিয়া টাস্ক ফোর্স এর লাইভ দেখাচ্ছে, তাঁদের. প্ৰশ্ন করতে যে হিমঘরে কেন যাচ্ছেন না? না দেখতে পারবেন না। আসলে সবটাই হলো মানুষের চোখে ধুলো দেবার ছক! মিডিয়ার কি,তারা প্রচার করছে আর সরকারের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে পয়সা কামাচ্ছে। মরছে গরিব সাধারন মানুষ। অতীতে ও আমরা অনেকবার টাস্ক ফোর্সকে দেখেছি কিন্তু দেখাতে পারবেন তাতে কোনো কাজ হয়েছে?. না পারবেন না!তবে আর দু তিন মাস অপেক্ষা করুন দেখবেন এই চল্লিশ টাকার আলু আট থেকে দশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, কারণ তখন বাজারে নতুন আলুর আমদানি শুরু হবে অতএব ততো দিন পর্যন্ত কষ্ট করুন!আর মিডিয়াতে ঘন্টা খানেক কলতলার ঝগড়া গুলো দেখতে থাকুন, আর তৃপ্তি লাভ করুন। আমরা ভিকারী হই, আর ওরা লুটে নিক.

এতক্ষণ শুধু আলু নিয়ে বললাম কারন অনেক মানুষই এখন সবজি খাওয়া ভুলে গেছেন যা দাম। কিন্তু এই বিপর্যস্ত সময়ে বিকল্প ব্যবস্থা দেখাচ্ছে যাদবপুরে লাল ঝান্ডা, আসুন ওদের দীপাঞ্জন মিত্র শ্রমজীবী বাজারের গত২২/০৯/২০২০ মূল্য তালিকা টা দেখি একবার। অন্ততপক্ষে আপনার এলাকার বাজার দরের সাথে মিলিয়ে নিন।প্ৰতি কেজি হিসাবে.টমেটো ৫৫/- কাঁকরোল -৪০/- ভেন্ডি -৩০/- শসা -:৪০/- করলা –৪৫/- লঙ্কা -১০০/বেগুন -৪০/- গাঁটি কঁচু -২৫/- লাউ(গোটা)২৩/-
পটল -৪০/- পাতিলেবু(per PC)-২/-পেঁপে -৩০/-
অনেকেরই মনে হতে পারে কি করে দিচ্ছে? কারন ওরা সরাসরি চাষীর থেকে কিনে(no profit , no loss system )। লাল ঝান্ডার ছাত্র, যুবরা ভ্যান নিয়ে বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছে, নিজেদের তো স্টল আছেই! যাঁরা বয়স্ক বেরোতে পারছেন না তাঁদের জন্য। রাজ্যে সরকারের তো একটা ডিপার্টমেন্ট আছে নাম কৃষি বিপনন মন্ত্রক, অনেক তো বিজ্ঞাপনে খরচ করা হয় বা মিডিয়াকে হাতে রাখার জন্য আমার -আপনার দেওয়া ট্যাক্স এর টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়। বাস্তবে আমরা কতটা উপকৃত হই?

একবার ভেবে দেখুন. যে সিপিআই(এম) আজ মিডিয়ার কাছে ব্রাত্য(কারন সিপিআই(এম) এর কথা বললে তো আর লক্ষী লাভ হবে না) হ্যাঁ তারাই তো সরকারকে বিকল্প পথ দেখাচ্ছে। সেটাকে কি আমরা নিতে পারি না বা গ্রহণ করতে পারি না? তবে, এসব করতে গেলে কাটমানি খাওয়া চলবে না, প্রকৃত সৎ হতে হবে। আর সেটা বোধহয় কোনোদিনই হবে না। যারা সৎ তারাই আজকে মানুষকে কিছুটা হ’লেও বাঁচিয়ে রাখছেন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।