রাজ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

তরুণ নায়েক এর মতো পথশিক্ষকরাই এই সময়ে আলোর দিশারী


সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:১৯শে সেপ্টেম্বর:- পশ্চিম বর্ধমানের জোবা আটপাড়া নামে একটি আদিবাসী গ্রাম,সেখানে স্কুলের সংখ্যা নেই বললেই চলে। তার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো করোনা ভাইরাস সংক্রমন।আজ অনেক কিছু আনলক হলেও স্কুল খুলছে না এবং তা কবে খুলবে কেউ জানেনা।শুধু ঐ গ্রাম নয় পুরো পশ্চিমবাংলার স্কুল ,কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে তালা। প্রতিটি অভিভাবক থেকে তাদের সন্তান এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ চিন্তায় ব্যাকুল।যারা নিজেদের সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে অকুল পাথারে তাঁদের পক্ষে আর কারোও কথা ভাবার সময় নেই।

এর মাঝেও ভাবেন কেউ কেউ। যেমন ৩৪ বছর বয়সের তরুন নারায়ন নায়েক।এই অতিমারী সময়ে একটা পুরো গ্রামের বিদ্যালয়ের অভাব পূরণ করে দিয়েছেন। তাঁর পরিচয় এখন পথ শিক্ষক। এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গের সব বিষয়ে আগ্রহ থাকলেও শিক্ষা বিষয়ে এক অদ্ভুত নীরবতা। বিদ্যালয় আজ প্রায় দেড় বছর বন্ধ শিক্ষাক্ষেত্র ,বাচ্চারা ঘুরে ঘুরে বেড়ায় ,শুধু পড়াশুনোর ক্ষেত্রে সব বিশবাঁও জলে। সব দেখেশুনে নারায়ন নায়েক এক অদ্ভুত পরিকল্পনা করে পুরো জোবা গ্রামটাকেই বিদ্যালয় বানিয়ে ফেললেন। তিনি গ্রামের প্রতিটা বাড়ীতে পাঁচটা করে ব্ল্যাকবোর্ড লাগিয়েছেন।নিজের দ্বায়িত্ব বোধ থেকে প্রায় ৬০ জন শিশুকে পড়াশুনোয় ফিরিয়েছেন। বাচ্চাদের মুখে মুখে ছড়া শেখানো ,অক্ষর পরিচয় সব একা হাতে করে যাচ্ছেন এই পথ শিক্ষক।

এক সমীক্ষাতে জানা গেছে লকডাউন কি মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে অজপাড়াগাঁয়ের বাচ্চাদের উপর। তারা এতোই অভাবগ্রস্থ যে অনলাইন পড়াশোনা চালাবার উপায় ছিল না।পেটের ভাতই জোটে না তো এন্ড্রয়েড ফোন। সুত্র অনুযায়ী জানা গেছে আট শতাংশ বাচ্চা পড়াশুনোর সুযোগ পেয়েছে আর সাঁইত্রিশ শতাংশ বাচ্চা পড়াশুনো পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছে। শুধু পড়াশুনো নয় ,করোনা আবহে বাচ্চারা কিভাবে পরিষ্কার রাখবে তার পাঠ ও দিচ্ছেন এই পথশিক্ষক। এই কাজ করতে একটুও ফাঁকি নেই তাঁর। নিজের স্বার্থত্যাগ করেনএমন মানুষ আছেন বলেই তবু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাচ্চারা একটু শিক্ষার মুখ দেখছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।