দেশ

তারিখ ও সংখ্যাতত্বের নিরিখে লকডাউনে ধর্মীয় জমায়েত ।


পাপিয়া মজুমদার:চিন্তন নিউজ:৩রা এপ্রিল:- *মুসলিমরা চক্রান্ত করে নাকি ছড়িয়ে দিচ্ছে করোনা ‘- এমন প্রচার চলছে আজকাল হাটে বাজারে মাঠে-ময়দানে।আসুন তারিখের নিরিখে প্রচারিত এই বিষয়টির সত্যতা দেখে নেওয়া যাকঃ-

১২ই মার্চ, রাহুল গান্ধী (আমরা যারা ব্যঙ্গ করে পাপ্পু বলি) একটি ট্যুইট করে বলেছিলেন – আমাদের দেশে ও করোনা সাংঘাতিক রূপ নিতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের তার জন্য যাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
পাপ্পুর কথা না হয় শোনার প্রয়োজন নেই।

১৩ই মার্চ, স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানালো- ‘করোনা ভাইরাস’ ভারতবর্ষের জন্য তেমন ভয়ানক কিছু নয়।

১৩ই মার্চ, দিল্লির নিজামুদ্দিন মার্কাজে ৪০০০(চার হাজার) মুসলিম নিয়ে তাবলীগই জমায়েত শুরু হলো। ইসলামি প্রচার এবং বলা দরকার এরা নাকি রেডিক্যাল সংগঠন গুলোর কাছে শত্রু। কারণ এরা নাকি ইসলামের সঠিক ফলোয়ার নয়।

তা যাইহোক , সেই তাবলীগই জমায়েতে ২৫০ এর বেশি বিদেশি মুসলমানও ছিলেন। তারমধ্যে কতজন প্রচারক ও কতজন শুধুমাত্র অংশগ্রহণ করার জন্য এসেছিলেন জানা নেই। ১৫ই মার্চ তাবলীগই জমায়েত শেষ হলো।

১৬ই মার্চ হিন্দু মহাসভা “গোমুত্র খেলে নাকি করোনা কমবে”- তার জন্য সভার আয়োজন করলো।

১৬ই মার্চ দিল্লি সরকার সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্ধের আদেশ দিল। সব জায়গায় সেই আদেশ লিখিত ভাবে গেলো না। কেবলমাত্র মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রেস মিট করে এই কথা বললেন।

১৭ই মার্চ তিরুপতি মন্দির কমিটির হিসেব মতো ৪০০০০(চল্লিশ হাজার) তীর্থ যাত্রীর জমায়েত হলো।

১৭ই মার্চ উনাদের হিসেব মতো ভোর ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে ২৮ হাজার ৭১৬ জন তীর্থযাত্রী এসেছেন। ১.৫৩কোটি টাকার প্রণামি আদায় হয়েছে।

১৮ই মার্চ সকাল ৫টায় ৪৮হাজার ৪১জন তীর্থযাত্রী এসেছিলেন ।

১৯শে মার্চ ঐ ৫ টার সময় এসেছেন ৪২ হাজার ৮৪ জন। প্রণামী জুটেছে ২.৪০ কোটি টাকা।

১৯ শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রথম জনতা কার্ফু ঘোষণা করলেন।
ঐ দিন তীরুপতি,পরদিন পুরী ইত্যাদি মন্দির বন্ধ হয়ে যায়।

২২শে মার্চ, সকাল থেকে জনতা কার্ফু আর বিকেল থেকে থালা ঢোল কাশি নিয়ে রাস্তায় মোদি ভক্ত রা – ” করোনা যা যা যা করোনা যা “।
২৩শে মার্চ, পুনে মুম্বাই স্টেশনে হাজার হাজার শ্রমিক বাড়ি ফেরার জন্য ভীড় করলেন।

২৫ শে মার্চ গোটা দেশে লক ডাউন। লক ডাউন ভেঙে ইউ. পি’ র মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাম লালার মূর্তি নিয়ে রাস্তায় হাঁটলেন।
৩০ শে মার্চ রিভার্স মাইগ্রেশন।
দিল্লি সমেত বড় শহর থেকে অন্তত ১৭থেকে ১৮ লক্ষ মানুষ বাড়ি ফেরার জন্য রাস্তায়। সরকারের কোনো ও প্রস্তুতি নেই। ২৫ জন শ্রমিক মারা গেলেন।

৩০ শে মার্চ, ৫০০ জন হিন্দু তীর্থ যাত্রী বৈষ্ণদেবীতে আটকে ছিলেন । দিল্লিতে রাস্তায় ৫০ হাজার শ্রমিক।

৩০শে মার্চ, তাবলীগই জমায়েতের ৫ জনের মৃত্যু। এবং তারপর থেকে টাকা খাওয়া সাংবাদিক, গোদি মিডিয়ার সাংবাদিক নেমে পড়েছেন প্রচারে কেবল তাবলীগই জমায়েতের জন্যই ছড়িয়ে পড়লো করোনা।ভক্ত জার্নালিস্ট রাও উদ্ বাহু হয়ে নৃত্য শুরু করলো -……
করোনার জন্য নাকি চীন আর মুসলমানরা দায়ী।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।