চিন্তন নিউজ, কল্পনা গুপ্ত : ৯ ই নভেম্বর – গতকাল কেতুগ্রামের নিরলে সারা ভারত কৃষক সভা কেতুগ্রাম ১ ও ২ এরিয়া কমিটির উদ্যোগে বামপন্থী সংগঠনগুলি একটি কনভেনশনের আয়োজন করে। সভাপতিত্ব করেন কৃষক নেতা ফারুক মির্জা। বক্তব্য রাখেন সামাজিক ন্যায় মঞ্চের পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সহ সভাপতি তমাল মাঝি। এই কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা অচিন্ত্য মল্লিক। তিনি বলেন,’মানুষের রক্ত ঘামে তৈরি করার সম্পদ বিক্রি করে দিতে চাইছে মোদি অমিত শাহের সরকার। করোনা মহামারী সময় মানুষ যখন জীবন-জীবিকার সংকটে পড়েছে, তখনই মানুষকে ন্যূনতম সুরাহা দেওয়ার পরিবর্তে সংকট নামিয়ে আনছে বারবার। ১৫ লাখ করে প্রতিটি পরিবারের একাউন্টে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদি, দু কোটি বেকারের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, একটা প্রতিশ্রুতি পালন করেননি। আসলেই সরকারটা চলছে আদানি আম্বানিদের খুশিমতো, তাদের বন্ধু মোদি। কৃষকের ঋণ মুকুব হবেনা অথচ আদানি আম্বানি দেড় হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ মুকুব হয়ে যাবে। এমন এক অবস্থা তৈরি করেছেন এরা যেখানে আদানি আম্বানিদের পৌষ মাস আর জনগণের সর্বনাশ নেমে আসছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই, এর বিরুদ্ধে আগামী ২৬ নভেম্বর দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে।’ তিনি আরো বলেন, এতদিন যেটুকু খাদ্য সুরক্ষা বজায় ছিল সেটাও হারিয়ে যেতে বসেছে এই সরকারের বদান্যতায়। খাদ্য সুরক্ষাকে বাদ দিয়ে মজুতদার এবং কর্পোরেটদের স্বার্থে দেশের কৃষি আইনকে প্রণয়ন করা হয়েছে। ফসলের ন্যূনতম দাম আর কৃষকরা পাবেন না; চুক্তি প্রথার মধ্য দিয়ে কর্পোরেটের খুশিমতো চাষ করতে হবে কৃষকদের; জমির মালিক হয়েও জমিতে কৃষকের আর অধিকার থাকবে না। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য চাল , গম, আলু পিয়াজ উৎপাদন না করেও পুঁজিপতিরা তাদের লাভজনক ক্ষেত্রে চাষের জন্য বিনিয়োগ করবে। এতে এক সর্বনাশ নেমে আসবে আগামী দিনে। ১৯৫৬ সালে তৈরি করা শ্রম আইনে শ্রমিকের ন্যূনতম যেটুকু অধিকার ছিল, শ্রম আইন সংশোধন করার নামে শ্রমিকের সব নিয়ম শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলতে চাইছে এই সরকার, শ্রমিকদের প্রতিবাদ করার কোন অধিকার থাকবে না; ধর্মঘট করার অধিকার থাকবে না; যতক্ষন খুশী মালিকপক্ষ কাজ করিয়ে নেবে এবং ইচ্ছামতো কাছ থেকে ছাড়িয়ে দিতে পারে। এই বর্বর সরকারের বর্বর নীতির বিরুদ্ধে আগামী ২৬ শে নভেম্বর দেশজুড়ে ধর্মঘট সেই ধর্মঘট সফল করার কাজে আমাদের নামতে হবে। একদিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আর অন্যদিকে রাজ্যের তৃণমূলের সরকার জনগণের পয়লা নম্বর শত্রু। আপনি যে আলুভাতে ভাত খেয়েও বেঁচে থাকবেন, সে অধিকার নেই। আলু পেঁয়াজের দাম আকাশছোঁয়া, একটা কাঁচা লঙ্কার দাম এক টাকা–এই অবস্থায় মানুষ বাঁচবে কেমন করে। ওরা কোন পথ দেখাবে না। মানুষকে এই পথ বের করে নিতে হবে লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে।
সর্বনাশা কৃষি ও শ্রম আইন বাতিলের দাবিতে ও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে,
রেগা প্রকল্পে ১০০ দিনের পরিবর্তে ২০০ দিন করা ও মজুরী বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে, আয়করহীন প্রত্যেক পরিবারকে ৬ মাস ধরে ৭৫০০ টাকা করে দেওয়ার দাবিতে, সি.আই.টি. ইউ সহ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনগুলি ডাক দেয় আগামী ২৬ শে নভেম্বর, দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট সফল করার। পূর্বস্থলী-১ র ৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের নিয়ে আজ সমুদ্রগড় কৃষি সমবায়ে সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হ’ল। বক্তব্য রাখেন পার্টির জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য তাপস চ্যাটার্জি, সাকাউত হোসেন।
কাটোয়া ২ নম্বর ব্লকে কুরচীতে গণকনভেনশন অনুষ্ঠিত হলো। কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক অমল হালদার রাজ্যে তৃণমূল সরকারের ও কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতির তীব্র সমালোচনা করেন এবং ধর্মঘটে সকলকে সামিল হবার আহবান জানান। মেমারির সাতগাছিয়া, গলসী, কাটোয়ার সুদপুরেও সভা হয়।
রায়না-২ এরিয়া কমিটি পহলানপুর অঞ্চলের ফতেপুর গ্রামে সি পি আই এম পার্টির পক্ষ থেকে প্রায় ৫০ টি গরীব দুস্থ পরিবারকে চাল তুলে দেয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন বাসুদেব খাঁ, রায়না টু এরিয়া কমিটির সম্পাদক মির্জা আকতার আলী, জামাল উদ্দিন খাঁ, সুফি আমির আলী প্রমুখ।
কৃষক-ক্ষেতমজুর জাঠা মিছিল হলো কালনা ২ ব্লক কমিটির অন্তর্গত বড়ধামাস গ্ৰাম পঞ্চায়েতে শিবরাম পুরে। জয়রামপুর থেকে শুরু হয়ে দুপুরে বিরুহাগ্ৰামে বিরতি , দুপুরের খাবার সেরে মাতিশ্বর শিবরামপুরে এই জাঠা শেষ হয়। জাঠায় উপস্থিত সনাতন টুডু, অরুপ চ্যাটার্জী, মিতালী মুখার্জী প্রমুখ।