জেলা

পূর্ব বর্ধমান জেলার খবর


চিন্তন নিউজ, কল্পনা গুপ্ত ১৮ নভেম্বর – আজ শিক্ষক নেতা কৃষ্ণকুমার ব্রক্ষচারী সকাল ৬টা৩০মিনিটে কোলকাতার এক বেসরকারী হাসপাতাল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন । প্রয়াত শিক্ষক নেতা ১৯৮৪ সালে ইছাপুর শ্রী গদাধর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পদে যোগ দেন। শিক্ষক আন্দোলন ও কৃষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সি,পি,আই(এম) পার্টির সংস্পর্শে আসেন ও ১৯৯০সালে পার্টির সদস্য পদ অর্জন করেন । তিনি পার্টির শাখা সম্পাদক ছিলেন। সেই সময় পার্টির কালনা ২ নং লোকাল কমিটির সদস্য হন। শিক্ষক আন্দোলনে মহকুমা স্তরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ।তাঁর মৃতদেহ বাড়িতে এলে সেখানে পার্টির নেতৃত্ব সহ অগণিত মানুষ উপস্থিত হন । তাঁকে পার্টির রক্তপতাকা দিয়ে সম্মানিত করেছেন মহম্মদ আলি । এছাড়া শ্রদ্ধা জানান মহম্মদ শা, আলিম মণ্ডল, নবকুমার বাগ, নারায়ন চন্দ্র মুর্মু প্রমুখ , সেখান থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর কর্মক্ষেত্র ইছাপুর শ্রী গদাধর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ,শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীবৃন্দ তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সি,পি,আই (এম ) কালনা ২ এরিয়া কমিটির অফিসে, সেখানে শ্রদ্ধা জানান এরিয়া কমিটির সম্পাদক সনাতন টুডু , শ্রীকুমার দুবে , অঞ্জলী মণ্ডল , অশোক গোস্বামী ও বিভিন্ন গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ । সেখানে থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় এ,বি,টি,এ কালনা জোনাল অফিসে। সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান এ,বি,টি,এ ও এ,বি,পি,টি,এ-এর নেতৃবৃন্দ। তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় কালনা শশ্মানে। তাঁর স্ত্রী ,এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান বর্তমান ।

কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ও ফেডারেশনসমূহ এবং গণ সংগঠনসমূহের ডাকে আগামী ২৬ নভেম্বর, ২০২০ সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে আজ সকালে বর্ধমান শহরের ২নং এরিয়া কমিটির অন্তর্গত হারাধন পল্লী এলাকায় ও বিকালে বড়বাজার চাঁদনী চক এলাকায় দুটি প্রতিবাদ সভা আয়োজন করা হয়। হারাধন পল্লী এলাকায় বক্তব্য রাখেন অরিন্দম মৌলিক ও তুষার মজুমদার এবং বড়বাজার চাঁদনী চক এলাকায় বক্তব্য রাখেন প্রলয় আইচ, অঞ্জন বিশ্বাস ও শৌভিক চট্টরাজ। দুটি প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন এরিয়া কমিটির সম্পাদক তরুণ রায় ও অন্যান্য কর্মী-সদস্যবৃন্দ।

কালনা ২ এরিয়ার ছোটো বহরকুলি গ্রামে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ক্ষেতমজুররা মিছিলে করে। ২৬ নভেম্বর সর্বভারতীয় সাধারন ধর্মঘটকে সামনে রেখে আজ বর্ধমান সদর ১ এরিয়ার রায়ান ১ অঞ্চলের নাড়িকেল বাগান, আদিবাসী পাড়া, খাঁ পুকুর পূর্ব পাড়া, সুকান্তপল্লী ব্যাঙ্ক মার্কেট মোড় ও নাড়ি মোড়ে পথসভা হলো। সি.আই.টি.ইউ, সারা ভারত কৃষক সভা, ডি ওয়াই.এফ. আই সহ বামপন্থী গণ সংগঠনের যৌথ পথসভা সংগঠিত হয়।

২৬ শে নভেম্বর ধর্মঘট হবেই এই বার্তা দিল পুলিশলাইন বাজারের শ্রমজীবী মানুষ।
মোদী সরকারের নীতির ফলে আজ সব আনাজের দামে আগুন। সি পি আই এম বর্ধমান শহর ১ এরিয়া কমিটির উদ্যোগে পুলিশ লাইন বাজারে ধর্মঘটের সমর্থনে পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন সি পি আই এম নেত্রী সুপর্ণা ব্যানার্জি। এছাড়া এরিয়া কমিটির নেতৃত্ব দেব দুলাল ঠাকুর ও প্রশান্ত দাসচৌধুরী বলেন এই ধর্মঘট অতীতের সব ধর্মঘটের রেকর্ডকে ছাপিয়ে যাবে। সারা দেশের সাথে বর্ধমান শহরেও ঐ দিন শ্রমজীবী মানুষ তাদের নিজের নিজের কাজ বন্ধ রেখে মোদীর বিরুদ্ধে রাস্তায় থাকবে। এই ধর্মঘট হবে সব অংশের মানুষের রুটি, রুজি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ধর্মঘট। করোনা পরিস্থিতিতে সারা দেশে প্রায় পনেরো কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করে নি এই দুই সরকার। দেশের একটার পর একটা লাভজনক কারখানাকে বেচে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। শ্রম আইন বাতিল করে শ্রমিকদের সমস্ত রকম অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে মোদী। এই আইনে শ্রমিকরা ধর্মঘট করতে পারবে না। ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করলে তাদের জরিমানা, এমনকি জেল ও কঠোর শাস্তি হতে পারে। সারা দেশে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই। হাতরসের ঘটনা সারা দেশের মহিলা সমাজকে আতঙ্কিত করেছে। সরকার নিশ্চুপ। অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই ধর্মঘটে মহিলারাও সংগঠিত হচ্ছে। বেকার যুবদের কাজ নেই, নতুন কোন কারখানা হয় নি । শূন্যপদ গুলিতে নিয়োগ বন্ধ। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের মধ্যে দিয়ে গরীব পরিবারের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া কার্যত বন্ধ হতে চলেছে। এক ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে। তাই জোট বাঁধছে ছাত্র যুবরা। এই সভায় ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করছে ধর্মঘটে স্তব্ধ হবে বর্ধমান।
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন জীবন চক্রবর্ত্তী।

২৬ নভেম্বর সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে আজ সারা ভরত কৃষক সভা ভাতাড় ১ ব্লক কমিটির বলগোনা বাজারে মিছিল ও বলগোনা বাসস্টান্ড মোরে একটি পথ সভা অনুষ্ঠিত হয় বিকালে। উক্ত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন এ আই কে এস পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক ও সিপিআইএম রাজ্যকমিটির অন্যতম সদস্য সৈয়দ হোসেন ও এ আই কে এস ভাতাড় ১ ব্লক কমিটির সম্পাদক নজরুল হক ।
ধর্মঘটের ৭ দফা কেন্দ্রীয় দাবী সমূহ :
★১ আয়করের আওতাভূক্ত নয়, এমন প্রতিটি পরিবারের জন্য প্রতি মাসে নগদ ৭৫০০ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
★২ ঐ সমস্ত পরিবারকে মাথাপিছু দশ কেজি করে খাদ্যশস্য দিতে হবে।
★৩ গ্রামীন রেগা প্রকল্পে ২০০ দিনের কাজ নিশ্চিত করতে হবে,এই প্রকল্প শহরেও চালু করতে হবে।
★৪ সংসদে জবরদস্তি করে পাস করানো শ্রমকোড বাতিল করতে হবে ।
★৫ কৃষি ও কৃষকের স্বার্থ বিরোধী তিনটি কৃষি আইন বাতিল করতে হবে ।
★৬ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব শিল্পসংস্থায় ঢালাও বেসরকারীকরণ বন্ধ করতে হবে । বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ও সরকারি সংস্থায় চাপিয়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক অবসর প্রকল্প বাতিল করতে হবে।
★৭ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমজীবী মানুষদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প সহ সার্বজনীন পেনশন চালু করতে হবে ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।