কল্পনা গুপ্ত, নিউজ চিন্তন:২২শে জুলাই:- উড়িষ্যার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আদিবাসীরা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে অনেকাংশে মুক্ত। বাইরের জগতের সাথে মেলামেশা অনেক কম। এরা পুষ্টি যুক্ত খাদ্য পেয়ে থাকে উদ্ভিদের পাতা,কন্দ এমনকি ছত্রাক থেকে।
বেশিরভাগ জাতীয় উদ্যানগুলি বর্ষার শুরুতেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটি একটি বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনা।
এই সময়ে অরণ্য ও অরণ্যচারী প্রাণীদের নতুন জীবন উৎপাদনের সময় যা বর্ষা পরবর্তী সময়ে আরণ্যক পরিবেশকে আরো সতেজ করে তোলে। বসুন্ধরা নামে একটি নগরকেন্দ্রিক স্বেচ্ছা সংগঠনের প্রবীন গবেষক হেমন্ত সাহু বলেন, এই বিচ্ছিন্নকরণের ফলে উড়িষ্যার অরণ্য উপজাতিরা পরবর্তী চারমাসের জন্য কোভিদ ১৯ এর সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাবে।
ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের গুঞ্জরাম বোদরা বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ধান উৎপাদন হওয়ার জন্যও বাইরের জগত থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন থাকে এই বর্ষাকালে। হেমন্ত সাহুর কথায়, উপজাতি মানুষেরা তাদের খাদ্যের জন্য বাজারের উপর নির্ভরশীল নয়। গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে ২২৮ রকমের পুষ্টিযুক্ত খাদ্যের উৎস আছে এক সিমলিপালেই। এগুলি উদ্ভিদের পাতা, কন্দ ইত্যাদি থেকে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানী দেবল দেবের অনুসন্ধান অনুযায়ী রায়গাঢা জেলায় অরণ্য উৎপাদিত যে বুনো খাদ্য যার ১২-২৪.৪ শতাংশ পুষ্টি ও এনার্জি উৎপাদন গুনে সমৃদ্ধ যা অরণ্যবাসীরা রান্না করে খায়।
জুলাইয়ে বেশি পরিমাণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে সুন্দরগড়, কেওঞ্জর, ময়ূরভঞ্জ, কোরাপুট জেলার প্রধাণত শহরাঞ্চলে দেখা দিলেও সিমলিপালের বনাঞ্চলের পরিবেশে এই অতিমারির সংক্রমণ কিন্তু স্পর্শ করতে পারেনি। অরণ্য গবেষকদের মতে যেহেতু অরণ্য উপজাতিরা লোক চক্ষুর অন্তরালে অরণ্যের ভেতরে প্রাকৃতিক ভাবেই বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করে সেকারণে তারা এই সংক্রমণ থেকে মুক্ত। বেশিরভাগ এই উপজাতির মানুষ যেহেতু নানারকম স্বাস্থ্য পরিষেবার আওতাভুক্ত নয় তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে সংক্রমণের হাত থেকে এদের রক্ষা করার একমাত্র উপায় হলো এভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে লকডাউনে। গবেষকরা বনাঞ্চলে পৃথক ভাবে থাকার ওপরে গুরুত্ব দিচ্ছেন ও সরকারকে তা রক্ষার জন্য সতর্কবার্তা দিচ্ছেন।