চিন্তন নিউজ:১৩ নভেম্বর,২০২৪:- দিল্লী থেকে চিন্তন এর নিজস্ব সংবাদদাতা :–
সিপিআইএম এর দিল্লী রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ২২ – ২৪ সে নভেম্বর ‘ ২৪ । সেই সম্মেলন কে সামনে রেখে গতকাল হরকিষন সিং সুরজিৎ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এক রাজনৈতিক সেমিনার। মূল বিষয়: লোকতন্ত্রের উপর রাষ্ট্রীয় হামলা। মূল বিষয় টি কে চারটি আলাদা আলাদা বিষয়ে ভাগ করে বক্তব্য রাখেন চারজন বক্তা।
১) বিষয় : মিডিয়ার উপর হামলা : বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট মহিলা সাংবাদিক ভাষা সিংহ। তিনি একসময় ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকার সাংবাদিকতা করলেও, এখন নিউজ ক্লিক সংবাদ মাধ্যম এর সাংবাদিক। চিফ এডিটর সুরজিৎ পুরকায়স্থ ‘ র সাথে তাঁকেও জেলে ঢুকিয়েছিল মোদী সরকার। তিনি তাঁর বক্তব্যে অসংখ্য উদাহরণ দিয়ে যে বিষয় গুলো তুলে ধরেন।
২) বিষয়: শিক্ষায় গৈরিকীকরণ : বক্তা ছিলেন রাজীব কুনওয়ার। তিনি তাঁর বক্তব্যে শিক্ষা কে কিভাবে বাণিজ্যিকীকরণ করা হচ্ছে, শিক্ষা কে বিশ্ব বাজারের সাথে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে, শিক্ষা কে বিজ্ঞান মুখী না করে হিন্দু ধর্ম মুখী করা হচ্ছে – এই দিক গুলো রাজ্য ধরে ধরে তুলে ধরেন।
৩) বিষয়: সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার মূল ভাবনার উপর হামলা । এই বিষয়ে বলেন সু প্রসিদ্ধ অধ্যাপক ওমর ফারুখী। তিনি মূলত ব্যাখ্যা করেন – সংবিধান প্রণয়ন থেকে শুরু করে সংবিধান সংশোধনের ইতিহাস বনাম আজকের বিজেপি সরকার কিভাবে সংবিধানের চরিত্র টাই বদল করে দিচ্ছে – সেই বিষয় টা। ভারতীয় সংবিধান মানেই হলো হিন্দুদের জন্যে সংবিধান – এই ভাবনা কে কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে – যেখানে সংঘ পরিবারের ইচ্ছা এবং চাওয়া গুলো কে সু কৌশলে প্রয়োগ করছে আদালত গুলো – সেটাই ছিল তাঁর বক্তব্যের মূল কথা।
৪) বিষয় : লোকতন্ত্র বা গণতন্ত্রের উপর হামলা। বক্তা ছিলেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী চন্দর উদয় সিং।
তিনি তাঁর বক্তব্যে ভারতীয় নাগরিকদের সংবিধান প্রদত্ত অধিকার এবং তার অপপ্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন। কেন্দ্রীয় সরকার কিভাবে ভারতে দুই স্তরিয় ব্যবস্থা কায়েম করতে চাইছে – ভারত মানে হিন্দুদের বাসস্থান । বাকি সব জাতি, ধর্ম, ভাষার মানুষ হিন্দুদের দয়া ভিক্ষা করে বাস করবেন – এই ধারণা কে মানুষের মনে দৃঢ় ভাবে গেঁথে দেবার কাজটাই করে চলেছে বর্তমান বিজেপি সরকার – সেটাই ব্যাখ্যা করেন । এবং এই কাজে বিজেপি, আরএসএস এর ল্যাবরেটরি যদি হয় নাগপুর, তাহলে বাস্তবায়িত করার প্রাথমিক জমি হলো গুজরাট রাজ্য – সেটাই একের পর এক উদাহরণ দিয়ে তিনি তুলে ধরেন।
শেষকালে – যে বিষয় টা উঠে আসে , টা হলো – বিষয়টার গুরুত্ব প্রথমে নিজেদের পরিষ্কার করে বুঝতে হবে – তারপর, মানুষকে বোঝাতে হবে ।
বিচার ব্যবস্থার উপর নির্ভরতা কম করে , নিরন্তর গণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সরকার – প্রশাসন – এজেন্সি – বিচারব্যবস্থা কে চাপে রাখতে হবে – এটাই কাজ।