চৈতালি নন্দী: চিন্তন নিউজ:৯ই আগস্ট:– পেরুর ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পটপরিবর্তন। এই প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হলেন বামপন্থী নেতা পেদ্রো কাস্তিও। এবছর ১৯শে জুলাই এই নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। পেরুর স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালেই রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন ‘ফ্রি পেরু’র বামপন্থী শিক্ষক নেতা পেদ্রো কাস্তিও। দীর্ঘ ছয় সপ্তাহের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণপন্থী ‘পপুলার ফোর্সের’ নেতা কেইপে ফুজিয়ামাকে পরাজিত করে দেশের ৬৩তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন পেদ্রো।
তৃনমূল স্তর থেকে সফল শিক্ষক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে নেতৃত্বে উঠে এসেছেন তিনি। এক হতদরিদ্র, নিরক্ষর, বামপন্থী, কৃষক পরিবারের সন্তান ছিলেন পেদ্রো। ২০১৭ সালে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিয়ে দেশজোড়া সফল আন্দোলনের নেতৃত্ব তাঁকে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসে। শুধুমাত্র শিক্ষকদের সংগঠিত করাই নয়, এই আন্দোলনে সামিল হয় খনিশ্রমিক ও কৃষকরাও।
পেরুর মিডিয়ার ৮০%-এর নিয়ন্ত্রণকারী’গ্রুপ এল কমার্সিও’-র নেতিবাচক প্রচারও পেদ্রো কাস্তিওকে আটকাতে পারেনি। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে পেদ্রোর, তা প্রমাণে উঠেপড়ে লাগে তারা। এমনকি ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ ও কাস্তিওর শাইনিং পথের কথা প্রচার করতে থাকে, যা মূলতঃ বামপন্থার বিরুদ্ধে কুৎসামূলক প্রচার।
প্রথম থেকেই পেদ্রোর মুখ্য স্লোগান ছিল,”ধনী দেশে একজনও গরীব মানুষ থাকবেনা”। মার্কিন ঔপনিবেশিক ক্ষত নিরাময় করে নতুন নির্বাচিত গণপরিষদ, নতুন সংবিধান, মার্কিন সেনাবাহিনীর ঝাঁপ বন্ধ করে ‘ইউএসএইড’কে বহিষ্কারের ডাক দেন তিনি। ক্রমান্বয়ে পড়তে থাকা জিডিপি, বাণিজ্যিক মন্দা, দারিদ্র্য, বেকারত্বকে সরিয়ে দিয়ে দেশে এক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ শুরু করতে চলেছেন তিনি। প্রাকৃতিক সম্পদের রাষ্ট্রীয় মালিকানার সঙ্গে সঙ্গে কৃষক পরিচালিত অর্থনীতির এক নতুন মডেল আনতে চান তিনি যা নিয়ে আসবে দেশে আর্থিক স্থিতি, যা দেশের আমজনতার কথা বলবে।