দেশ রাজ্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

পুরুলিয়ায় পার্থেনিয়াম আতঙ্ক


রত্না দাস, চিন্তন নিউজ, ২৪ জুন: ঝাড়গ্রাম সহ পুরুলিয়ার বহু জায়গায় দ্রুত বাড়ছে পার্থেনিয়াম গাছ। আগামী ২০ বছরের মধ্যেই এই সব এলাকা বিষাক্ত ঘাসের দখলে চলে যাবে বলে গবেষকদের মত।

উদ্ভিদ বিদ্যার গবেষক ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ জানান, এই গাছ আমেরিকার গম বীজের সাথে এদেশে আসে। বছর ২০ আগেও এই গাছ অল্পবিস্তর দেখা যেত। এখন অনেক বেশি পরিমানে দেখা যায়। এর ফুলের রেনু খুবই মারাত্মক। এই গাছের কোনো স্বাদ নেই বলে গরু ছাগলও তা খায় না। দুএকজন এই গাছের দ্বারা আক্রান্ত হলেও তা মহামারীর আকার নিয়েছে বলে তেমন তথ্য নেই।

প্রকৃতি প্রেমিক তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক মনোরঞ্জন মাহাতর মতে, রাস্তার ধারে, বনভূমি ঘেঁষে, শস্য ক্ষেতের আলে নিঃশব্দে শেকড় মেলে চলেছে এই গাছ। দেখতে সুন্দর সবুজ বাহারি পাতা, বুটি বুটি সাদা ফুলে কীট পতঙ্গের সাথে মানুষেরও নজর আটকে যায়। এই গাছ এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত লম্বা হয় ও তিন-চার মাসের মধ্যে ফুল হয়।একটি গাছ থেকে বছরে ৪ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত বীজ হয়।

এই গাছে ‘সিসকোয়াট আপরেন লাকটনস’ নামে একটি মারাত্মক বিষ আছে। এই গাছ শস্য ক্ষেতের বন্ধু পোকা ও শত্রু পোকা মারে। এই গাছ শস্য ক্ষেতে থাকলে সেই জমির উৎপাদন ৪০% পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। ভুট্টা, সর্ষে, বেগুন, লঙ্কা, টমাটো ক্ষেত এই গাছের প্রিয় ভূমি। কীটনাশক দমন করার হরমোন দিয়ে ফসল বাড়ানো যায় না।

প্রাণীদেহে এই ঘাস থেকে মারাত্মক বিষক্রিয়া হয়। সর্দিকাশি, হাঁচি, গলা ফোলা, জ্বর হয়ে শরীর রক্তাভ হয়ে যায়। এর কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। হাতে পায়ে লাগলে তা লাল হয়ে ফুটে ওঠে ও চর্ম রোগের সৃষ্টি হয়। মানুষের জন্য বিপজ্জনক হলো এই ফুলের রেনু। বাতাসে ভেসে বেড়ায় বলে তা মানুষের ফুসফুসে প্রবেশ করে ও তা থেকে মাথা ব্যথা, ব্রঙ্কাইটিস, উচ্চরক্ত চাপ ইত্যাদি রোগ হয়।এই গাছ নষ্ট করার কোনো ওষুধ জানা নেই আজ অবধি।

মনোরঞ্জন বাবু জানান, এর জন্মভুমি মেক্সিকো।বর্তমানে আমেরিকা, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, চীন, নেপাল, ভুটানে এই গাছ দ্রুত বাড়ছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম পারথেনিয়াম হাই ষ্টিরোফ্লোরাস।এই সময় কালে তার ফুলের রেনু ছাড়ানোর সময়। তা থেকে সতর্ক থাকা দরকার।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।