নিউজ ডেস্ক: চিন্তন নিউজ:১৭ই আগস্ট:- প্রয়াত হলেন পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণ প্রাপ্ত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কিংবদন্তি শিল্পী পন্ডিত যশরাজ। আজ আমেরিকার নিউ জার্সিতে নব্বই উত্তীর্ণ এই কন্ঠ সঙ্গীত শিল্পীর জীবনাবসান ঘটে।
বিগত আট দশকে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে পন্ডিত যশরাজের অবদান অসামান্য। মেওয়াতি ঘরানার এই শিল্পী ভারতবর্ষ, ক্যানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর অসংখ্য ছাত্রদের সঙ্গীতে তালিম দিয়েছেন।
জন্ম ১৯৩০ সালের ২৮ জানুয়ারি হরিয়ানার হিসার জেলায়। পিতা পন্ডিত মতিরামও ছিলেন একজন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী কিন্তু প্রয়াত হ’ন যখন যশরাজের বয়স মাত্র চার। তাঁর দুই দাদা পন্ডিত মণিরাম ও পন্ডিত প্রতাপ নারায়ণ ছিলেন অত্যন্ত গুণী শিল্পী।
যুবক যশরাজ সঙ্গীতের তালিম নেবার জন্য হায়দ্রাবাদ, গুজরাটের সানন্দে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। সানন্দে জয়ন্ত সিং বাঘেলার কাছে তালিম নেন। ১৯৪৬ সালে চলে আসেন কলকাতায়। আকাশবাণীতে নিয়মিত সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। ১৯৫২ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে প্রথম মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ১৯৬২ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ভি সান্তারামের কণ্যা মধুরাকে বিয়ে করেন। ১৯৬৩ সালে কলকাতা থেকে মুম্বাই চলে যান।
মেওয়াতি ঘরানা মূলতঃ খেয়াল গায়নের প্রসিদ্ধ হলেও যশরাজ শুধু তাতে সীমাবদ্ধ থাকেননি। খেয়ালের পাশাপাশি ঠুংরি, ভজনেও ছিলেন সমান দক্ষ। খেয়ালে পুরুষ এবং মহিলা কন্ঠের যুগলবন্দী তিনিই চালু করেন। নাম দেন ‘যশরঙ্গী’। আধুনিক রাগপ্রধান গানকে জনপ্রিয় করার কাজে পন্ডিত যশরাজের ছিল অসামান্য ভূমিকা। বেশ কিছু ছবিতে তিনি প্লে-ব্যাক করেন।
গত বছর শাস্ত্রীর সঙ্গীতের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা (আই এ ইউ) ২০০৬ সালে আবিষ্কৃত একটি গ্রহাণু ২০০৬ ভিপি৩২’র নামকরণ করে, ‘পন্ডিত যশরাজ’।
পরিণত বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পন্ডিত যশরাজের মৃত্যু হলেও এই অতিমারিকালে স্কাইপের মাধ্যমে তিনি সংগীতের তালিম দিতেন। পন্ডিত যশরাজের প্রয়াণে সঙ্গীত জগতে এক শূণ্যতার সৃষ্টি হলেও তাঁর সুর থেকে যাবে অনন্তকাল।