চিন্তন নিউজ, কল্পনা গুপ্ত, ১৫ জানুয়ারি, ২০২২ – আমরা ভারতের জনগণ, ভারতকে সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে এবং তার নাগরিকই যাতে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার, চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা, সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যাক্তির মর্যাদা, জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে যাতে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে ওঠে তার জন্য সত্যনিষ্ঠার সংগে শপথ গ্রহণ করে, আমাদের গণপরিষদ ১৯৪৯ সালে ২৬ শে নভেম্বর নিজেদের অর্পণ করেছে। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানের এই প্রস্তাবণাকে অমান্য করেই প্রত্যহ চলেছে অসংবিধানিক ক্রিয়াকলাপ। খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক মতাদর্শের আনুকূল্য বাড়িয়ে নিয়ে চলেছে ক্রমবর্ধমান হিংসার বাতাবরণ। সম্প্রতি হরিদ্বারে আয়োজিত ধর্ম সংসদ থেকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতারা নাগরিকদের ডাক দিয়েছেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নেবার। এইভাবে ঘৃণার বিষ ছড়ানোর ফল হবে বিভীষিকাময়। কিন্তু এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিঅদ্ভুত ভাবে নীরব। মোদিকে মুখ খোলার জন্য খোলা চিঠি লিখলেন ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টের ছাত্র ও ফ্যাকাল্টি সদস্যদের একটি দল। খোলা চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা বলেছেন, এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা হিংসাকে উৎসাহিত করছে। চিঠিতে মোট ১৮৩ জন স্বাক্ষর করেছেন, যার মধ্যে আইআইএম (IIM) আহমেদাবাদ এবং আইআইএম (IIM) ব্যাঙ্গালুরুর ১৩ জন ফ্যাকাল্টি সদস্য ও ছাত্ররা রয়েছেন।আইআইএম IIM ব্যাঙ্গালুরু ৫ ফ্যাকাল্টি সদস্যরা হলেন – প্রতীক রাজ, দীপক মালঘান, ডালহিয়া মণি, রাজলক্ষ্মী ভি মূর্তি এবং হেমা স্বামীনাথন। মালঘান একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ।
ছাত্র শিক্ষকরা তাদের চিঠিতে বলেছেন – ” আপনার নীরবতা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ঘৃণাভরা কন্ঠকে উৎসাহিত করে এবং আমাদের দেশের ঐক্য ও অখন্ডতাকে হুমকির মুখে ফেলে। আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি, আমাদের বিভক্ত করতে চায় এমন শক্তির বিরুদ্ধে দৃঢভাবে দাঁড়ানোর জন্য।.. ধর্ম/বর্ণ পরিচয়ের ভিত্তিতে সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য বক্তব্য এবং সহিংসতার আহবান গ্রহনযোগ্য নয়।” চিঠিতে আরো বলা হয় – ” আমাদের দেশে এখনও ভয়ের অনুভূতি রয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলিতে গীর্জাসহ উপাসনালয়গুলি ভাঙ্গচুর করা হচ্ছে, এবং মুসলিম ভাইবোনেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নেওয়ার ডাক জানানো হয়েছে। এইসবই সংঘটিত হচ্ছে, দায় থেকে মুক্তির আশ্বাস এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার অবর্তমানে তৈরি হওয়া অসামাজিক মানসিকতার জন্য। “