দেশ

হিন্দু মৃতের সৎকার করলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা ::—-করোনা আতঙ্কের মাঝে এক নতুন ভারত


রত্না দাস:চিন্তন নিউজ:৩১শে মার্চ:–বর্তমানে সারা দেশজুড়ে একটাই আতঙ্ক করোনা আর করোনা। শুধু দেশজুড়ে নয় সমস্ত বিশ্বের লোক এই ভাইরাস দ্বারা আতঙ্কিত। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কেউ একটু অসুস্থ হলে কিংবা কারোর স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটলেও নেপথ্যে করোনা কে দায়ী করা হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশে বুলন্দশহরের বাসিন্দা রবি শংকরের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা। বৃদ্ধ ছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত রুগী। শনিবার দুপুরে তিনি মারা যান। এই খবর জানার পর পাড়া-প্রতিবেশী কিংবা আত্মীয়-স্বজন মনে করেন করোনার সংক্রমণের জেরেই মৃত্যু হয়েছে রবিশংকরের। তাই শেষ দেখা টুকু কেউ দেখতে আসেননি ।সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয় ।অসহায় শোকাহত পরিবারটি চিন্তায় পড়ে যায় সৎকার কিভাবে হবে এই ভেবে।কারণ শ্মশান অবধি কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার মতো কেউই নেই।

রবিশঙ্করের পাড়ার পাশেই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা। এই খবর জানাজানি হতেই একদল মুসলিম যুবক চলে আসে এই হিন্দুর বাড়িতে। অসহায় পরিবারের চরম বিপদের সময় মুসলিম যুবকরাই দেবদূতের মতো উপস্থিত হয়।তারা আশ্বাস দেয় যে সৎকারের সমস্ত কাজে তারাই সাহায্য করবে।

মাথায় ফেজটুপি আর মুসলিম যুবকদের মুখে, ‘ রাম নাম সত্য হ্যায় ‘ধ্বনি।তারা কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে যায় রবিশংকরের দেহ এবং সৎকারের সমস্ত ব্যবস্থা তারাই করে ।সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিওটি এখন ভাইরাল। সম্প্রীতির এই দৃশ্যতেই মজেছেন নেটিজেনরা বলছেন, ‘ এটাই আমাদের প্রকৃত ভারতবর্ষ ‘।

এদেশে হিন্দু মুসলমানদের লড়াই কিছু কম হয়নি।গত বছরই মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন বিদ্বজনেরা। মুসলিম যুবক কে খুন করা হয় গো মাংস বিক্রি করার জেরে।জামিয়া মালিয়া কিংবা জ্বলন্ত দিল্লি ইস্যু ধ্বজাধারী রাজনীতির শিকার এদেশে যে বারবার হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয়েছে ঝুড়ি ঝুড়ি এর উদাহরণ আছে।

এই বিভাজন নীতি দাবানলের মতো গ্রাস করেছে এই সমাজকে।অতীতেও হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দেশজুড়ে এই লকডাউন এর মাঝে বুলন্দ শহরের এই ঘটনা দেখে ধন্য ধন্য করছে নেটিজেনরা। সম্প্রতি দেশে এই ঘটনা সম্প্রীতির নজির গড়েছে।কেউ কেউ কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার লাইন উল্লেখ করে বলছেন, ‘মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান’।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এগুলোই যে মানবতার দলিল হয়ে রয়ে যাবে তা বোধহয় আলাদা করে আর বলার প্রয়োজন নেই।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।