বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

পাহাড়ী ফুল ….রডোডেনড্রন …


মীরা দাস:চিন্তন নিউজ:১লা জানুয়ারি:–রডোডেনড্রন নামটি এসেছে প্রাচীন গ্রিক শব্দ থেকে যার ”রডো ” যার অর্থ গোলাপ এবং ” ডেনড্রন ” অর্থ গাছ। অর্থাৎ রডোডেনড্রেন অর্থ গোলাপ গাছ। এই গাছ চির সবুজ ও গুল্মজাতীয়,এই গাছ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে জন্মাতে দেখা যায়। প্রজাতিভেদে এই গাছ ৪ ইঞ্চি থেকে সর্বোচ্চ ৯৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। গাছের পাতা বড় বড় পাতা হয়। এই গাছের ফুল ফোটে শীতের শেষ থেকে গ্রীষ্মের আগে পর্যন্ত্য।

এই ফুলের টানে হাজার হাজার পর্যটক পাহাড় মুখি হয়, নানা রঙের হয় যেমন লাল, হলুদ, সাদা, গোলাপি, বেগুনি ইত্যাদি হয় বছরের মার্চ, এপ্রিল, মে মাসে এই ফুলের রঙে পাহাড় রঙীন হয়ে ওঠে। সারা বিশ্বে রডোডেনড্রন প্রায় ১০২৪ টির বেশি প্রজাতি আছে। কিছু কিছু প্রজাতির ঔষধী গুণ ভালো আছে। এই সমস্ত গাছ থেকে কাশির ওষুধ, পেটের ব্যথার ওষুধ, এমন কি গলার ইনফেকশনের ওষুধ তৈরী করা হয়। তবে কিছু প্রজাতির গাছ আছে যাদের পাতা, ফুল, কান্ড সব অংশই বিষাক্ত, যদিও সংখ্যাটা কম।

পাহাড়ী উপজাতীর বাচ্চারা এই গাছের পাতা চিবিয়ে থাকে যার লাল রঙের রসে দাঁত লাল হয়ে যায়। এই কারনে উপজাতীরা এই গাছ কে ” দাঁতরঙা ” নামে ডাকে। তবে বিজ্ঞানীরা গবেষনা করে জানিয়েছেন যে এই ফুলের আদি বাসস্থান পুর্ব হিমালয়ের দেশগুলিতে। অর্থাৎ ভারত, নেপাল, ভুটান, তিব্বতে। বর্তমানে চিনের দক্ষিন পশ্চিমে ফুইচৌ প্রদেশের বি-চিয়ে এলাকায় প্রায় ১২৫.৮ বর্গ কিমি জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে রডোডেনড্রন উদ্যান। এখানে ৪১ টি আলাদা আলাদা রঙের রডোডেনড্রন ও এশিয়ার সবকটি প্রজাতি বর্তমান।

কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে দেখা যাচ্ছে যে মার্চ মাসের আগেই ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে এই ফুল ফোটা শুরু হচ্ছে। যার কারনে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এই ফুল যেমন নিদ্দির্ষ্ট সময়ের আগে ফুল ফোটাতে ফল এর পরিপক্কতা ও বীজের পরিস্ফুরনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আমরা যদি পরিবেশ দুষন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের লাগাম না টানতে পারি, তবে হয়তো পাহাড়ের সৌন্দর্য একদিন পৃথিবী থেকে চিরতরে লুপ্ত হয়ে যাবে ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।