কাকলি চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:২৭শে মে:- বিপদের শুরু হয়েছিল লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই, আমফান এসে কফিনে পেরেক ঠোকার কাজটা সম্পন্ন করে দিল। বইপাড়ার বহমান জীবন আজ স্তব্ধ এই দুয়ের উপর্যুপরি আঘাতে। ছোটবেলায় একটা কথা শুনতাম, বই চুরি চুরি নয়। কথাটা হয়তোবা ঠিক নয়। নিজের মত করে একটা মানে করে নিয়েছিলাম পরবর্তীতে। জ্ঞানভান্ডার কখনও চুরি করে নেওয়া সম্ভব নয়, তা অন্যের মধ্যে সম্প্রসারিত হলে দোষ কী?
ক্ষুদ্র অতিক্ষুদ্র থেকে অসংখ্য মানের প্রকাশক এখনও সঠিকভাবে জানেন না তাঁদের ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কতটা। এক বিরাট অংশের মানুষ এখানে রুটিরুজির টানে এখানে ডেলিপ্যাসেঞ্জারি করেন অথবা সপ্তাহের শেষে বাড়ি যান। তালাবন্দির কারণে গৃহবন্দী তাঁরা, আসতে পারছেন না। প্রেস, বাইন্ডার, কম্পোজিটার, প্রূফরিডার, দোকানের মালিক, কর্মচারী মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষের রুটিরুজির প্রশ্ন জড়িয়ে আছে বইপাড়ার গতিশীলতার সঙ্গে। শুধুমাত্র দোকানে নয়, কারখানা, প্রেসেও পড়ে আছে লক্ষ লক্ষ টাকার বই। মাধ্যমিক শেষ, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন ঘোষণা হয় লকডাউনের। ফলে একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণীর বইয়ের পাশাপাশি আই সি এস ই, সি বি এস ই র বইও চলে এসেছিল দিল্লি থেকে। সুপার সাইক্লোন ধুয়েমুছে সাফ করে দিয়েছে কয়েক কোটি টাকার অমূল্য জ্ঞানের ভান্ডার।
গিল্ডের সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে জানান ক্ষতিগ্রস্ত পুস্তক বিক্রেতা, প্রকাশক, সাহিত্য প্রেমী মানুষের প্রচেষ্টায় একটি তহবিল গড়ে তোলা হলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। একটি অ্যাকাউন্টও খোলা হচ্ছে বিশেষ তহবিল গঠনে। বহু দেশ কলকাতা বইমেলায় অংশগ্রহণ করে। সেই দেশগুলোর কাছেও আবেদন জানানো হবে দূতাবাসের মাধ্যমে।চেষ্টা চলবে দ্রুত এই ক্ষতি সামলে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার।
সর্বোচ্চ উদ্যোগ গ্রহণ করে সর্বাত্মক সাফল্য লাভ করতে বদ্ধপরিকর গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়। বাংলার ঐতিহ্য, বাঙালির ঐতিহ্য হতাশার অন্ধকারে ডুবে যেতে দেওয়া যাবে না কোনোমতেই। নাগরিক সমাজ আছেন প্রকাশকদের সাহায্যে, বইপ্রেমীদের সঙ্গে। চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার যথার্থই বলেছেন বইয়ের মৃত্যু হতে পারে না। আবারও খুব শীগগীরই কলেজ স্ট্রীট বইবাজার খুলছে, আশাবাদী সময় লাগলেও কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে এই বিপর্যয়।
![](https://chintannews.com/wp-content/uploads/2020/05/IMG_20200527_150537-1024x615.jpg)