-পাপিয়া মজুমদার: চিন্তন নিউজ:৩১শে জুলাই:-
গত মঙ্গলবার,২৮শে জুলাই সিপিআই (এম) নেত্রী বৃন্দা কারাত এক চিঠি লেখেন গৃহমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে এবং তার কপি পাঠান পুলিশ আধিকারিক -(পুলিশ কমিশনার, দিল্লি / ডি সি পি, নয়া দিল্লি) এর নিকট।
উনি সেই চিঠিতে লিখেছেন, নাগেশ্বর রাও একজন আই পি এস অফিসার, যিনি ডাইরেক্টর জেনারেল অফ ফায়ার সার্ভিস, হোম গার্ড ও সিভিল ডিফেন্স এর একজন পরিচালক হওয়া সত্বেও জনসমক্ষে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা গৃহ মন্ত্রীজির দৃষ্টি গোচরে আনতে চান ও দ্রুত এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেন।
প্রথমত, একজন আই পি এস অফিসার তথা কোনও সরকারি কর্মকর্তা কখনও কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থনে কিছু করতে পারেন না, জনগণকে কোনও দলের সমর্থনে অনুপ্রাণিত করার মতো বিবৃতিও দিতে পারেন না।
দ্বিতীয়ত,প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য ভারতের সংবিধানকে মানা ও রক্ষা করা।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ শে জুলাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয়েছে, উপরোক্ত ব্যক্তি জনসমক্ষে এক ট্যুইটার পেজে ট্যুইট করে বলেন যে, প্রখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ও অন্যান্য শিক্ষিত ঐতিহাসিকদের তথা মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করে দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতার উস্কানীমূলক মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ভারতের পুনর নির্মানের জন্য আর এস এস ও বিজেপির প্রকাশ্যে প্রশংসা করেছেন। তিনি বামপন্থীদের বিরুদ্ধেও বিরুদ্ধ মন্তব্য করেছেন।
প্রতিটি নাগরিকের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে আমাদের সংবিধানে। কিন্তু তিনি একজন সার্ভিসিং অফিসার হিসাবে পরিসেবা বিধি লঙ্ঘন করেছেন। আইপিসি (ইন্ডিয়ান পেনাল্টি কোড) এর ‘সেকশন ১৫৩ এ’ এবং ‘সেকশন ২৯৫ এ ‘
এর অধীনেও তিনি একজন অপরাধী।
এর আগেও তিনি নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে উড়িষ্যার বেরহমপুরে ডেভেলপমেন্ট অথরিটি তে সার্ভিস অফিসার থাকা কালীন অনেকটা এইরূপ সাম্প্রদায়িক উস্কানীমূলক মন্তব্য করেছিলেন। দুটি সরকারি অনুসন্ধানকারী কমিটি তাহাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। উনার সার্ভিস রেকর্ড তাই তখন থেকেই ভালো নয়। তিনি এইসব অপরাধে অভ্যস্ত।
তাঁর এইসব মন্তব্য গুলো হয়তো ৩১ শে জুলাই অবসরপ্রাপ্ত হবার পর বিজেপি কিংবা আর এস এস এ যুক্ত হবার যোগ্য করে তুলতে পারে।
তবে তিনি যেসব মন্তব্য একজন সার্ভিসিং অফিসার হিসাবে করেছেন, তা পরিসেবার বিধি লঙ্ঘনের জন্য অভিযোগ পত্রে অভিযুক্ত হবার যোগ্য।
আই পি সি র সংশ্লিষ্ট বিভাগের অধীনে মামলা করার দাবীও করেছেন তিনি।
বৃন্দা কারাত তাঁর চিঠিতে আশা প্রকাশ করে আরও বলেছেন গৃহ মন্ত্রী যেন এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। যাতে রাজনৈতিক ভাবে নিরপেক্ষ এবং সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থাকা দেশের যে সকল আধিকারিক রা চাকুরির বিধি লঙ্ঘন করার পাশাপাশি সংবিধানের চেতনা কে রাজনৈতিক ইচ্ছা শক্তির সাথে লঙ্ঘন করছেন, আইনানুসারে সকলকেই শাস্তির মুখোমুখি হওয়া উচিত।
যেহেতু দিল্লির পুলিশ গৃহমন্ত্রীর আওতাধীন, তাই তিনি এই রাওয়ের বিরুদ্ধে সেকশন ১৫৩ এ, সেকশন ২৯৫ এ এর অধীনে একটি এফ আই আর রেজিষ্ট্রেশন করার অনুমতি চেয়েছেন। গৃহ মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছেন প্রক্রিয়াটি দ্রুতকরণ করার জন্য।