চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:২২শে অক্টোবর:—বলিভিয়ায় আবার বিপুলভাবে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করলো ইভো মোরালেসের বামপন্থী মুভমেন্ট ফর সোস্যালিজম
(এমএএস)। ২০১৯ সালে দক্ষিণপন্থী মদতে দেশজুড়ে তৈরী হয় এক নজিরবিহীন অস্থিরতা। এর ফলে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন মোরালেস। কিন্তু তিনি দেশ ছাড়লেও তার সাংগঠনিক শক্তির চোরা স্রোতের মুখে ভেসে গেল দক্ষিণপন্থী দল মুভমেন্ট ফর সোস্যালিজম (এমএএস)। দু’দিন আগে বলিভিয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করলো লুইস আলবার্তো আরসে কাতাপেরা, যিনি ‘লুচো’ নামেই পরিচিত। এর আগে মোরালেসের মন্ত্রীসভার অর্থমন্ত্রী ছিলেন লুচো।
বলিভিয়ায় নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী কোনো প্রার্থী প্রথম রাউন্ডের ভোট গণনায় ৫০% ভোট পেলেই তিনি বিজয়ীর মর্যাদা লাভ করেন। এমএএস এর লুচো প্রথম রাউন্ডের গণণায় ৫২.৪% ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কার্লোস মেসা কে পরাজিত করেন। এই জয়কে গণতন্ত্রের পুনপ্রতিষ্ঠা বলে বলে মনে করছেন দেশের মানুষ ও এমএএস সরকার। পূর্ববর্তী অভ্যুত্থানে রাষ্ট্রপতি হওয়া জেনিন আনেজ এবারের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সাহস না পেলেও লুচোকে জয়ী বলে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হন। নির্বাসনে থাকা ইভো মোরালেস বামপন্থীদের জয়ের সংবাদ সাংবাদিকদের জানিয়ে বলেন, জনগনণের ইচ্ছার জয় হয়েছে। এবার দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোলো। এখানে উল্লেখযোগ্য যে ২০০৬ থেকে বলিভিয়ার আদি জনজাতিদের মধ্যে মোরালেসই ছিলেন প্রথম রাষ্ট্রপতি। শ্রমিক, কৃষক তথা দেশের মেহনতি জনতার প্রতিভু, যিনি দেশকে বাম অভিমুখে পরিচালিত করেছিলেন। একের পর এক জনমুখী সংস্কারে আমূল বদল এনেছিলেন দেশের অর্থনীতির। ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছিল বলিভিয়ার অভ্যন্তরে। দারিদ্র্যের হার নেমেছিল ৩৮% থেকে ১৫% এ। আর্থিক বৃদ্ধি ঘটেছিল ৩৪৫%। এই বামমুখী পরিবর্তনই দেশটিকে আমেরিকার ষড়যন্ত্রের সম্মুখীন করে তোলে। এছাড়াও ছিল বলিভিয়ার খনিজ সম্পদ, যা এই ক্ষুদ্র ও সম্পদশালী দেশটিকে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, জার্মানি ,কানাডা সহ পুঁজপতি দেশগুলোর শোষণের বধ্যভূমিতে পরিনত করে। বিশ্বের ২৫–৪৫% লিথিয়াম পাওয়া যায় এই দেশেই যা অটোমোবাইল শিল্প ও ইলেকট্রনিক ফোনের ব্যাটারির জন্যে অপরিহার্য।
এই জয়কে অভিনন্দন জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক কিউবার রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেল বলেন সাম্রাজ্যবাদী শাসনকে প্রত্যাখ্যান করেছে বলিভিয়ার মানুষ। হারানো অধিকার ফিরে পেয়েছে সে দেশের জনগণ। এই জয় স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে জয়। বিভিন্ন বামপন্থী রাষ্ট্রপতি দলগুলিও অভিনন্দন জানিয়েছে ঐক্যবদ্ধ বলিভিয়াকে।