রত্না দাস: চিন্তন নিউজ:৭ই সেপ্টেম্বর:- রান্নার হেঁশেলই লুকিয়ে আছে করোনা রোধে নানান উপকরণ। বাঙালির রোজের যে খাদ্যাভ্যাস তা থেকে উবে গেছে অনেক পদ যা কিনা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেসব জিনিস কিংবা হারানো পদের খোঁজ দিতেই সাধারণ মানুষের রান্না ঘরে পৌঁছাতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ।
করোনা রোধে বিজ্ঞান মঞ্চের ১৫ জন কর্মীকে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মহিলাদের এনিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। হেঁসেলে কি কি স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা নিলে খাদ্যগুণ বজায় থাকে যাতে শরীরের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ে তাই শেখানো হয়েছে। এই ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়লেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে ও করোনার সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যায় সেই বিষয়ে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
গত রবিবার বিজ্ঞান মঞ্চের সদর কার্যালয় এন্টালিতে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। যার নাম ‘রান্না ঘরে বিজ্ঞান’। বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা জানান সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ৮৫ শতাংশ মহিলা রান্নার আগে তরকারি কাটার বটি বা ছুরি ভালো করে ধুয়ে নেয় না। এ বিষয়ে তাদের সচেতন করা হয়েছে পাশাপাশি আবার জানানো হচ্ছে রান্না কখনো চড়া আচে নয়।সবজি ঢেকে দিয়ে কম আঁচে রান্না করতে হবে। সবজি কাটতে হবে মাঝারি মাপের এবং সবজিতে নুন দিতে হবে একদম রান্নার শেষে শুরুতে নয়।আটার রুটি বানানোর ঘন্টা খানেক আগেই আটা মেখে রাখতে হবে। আর রুটি গ্যাসের আগুনে সরাসরি সেকা যাবে না।সেটা চাটুতেই কাপড় চেপে চেপে সেঁকতে হবে। তবে উনুনের আগুনে সরাসরি সেঁকা যাবে। এই নিয়ম মেনে চললেই বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যা করোনার সংক্রমণ থেকে দূরে রাখবে মানুষকে । বিজ্ঞান মঞ্চ কলকাতা জেলার সম্পাদক শেখ সুলেমান বলেন,” আমাদের ১৫ জন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে বাড়ির মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।”
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা জানাচ্ছেন অধিকাংশ বাঙালি ভুলে গেছে দুধ-মুড়ি, দই-চিড়ে/ খই যব, ছোলার ছাতু কিংবা সাবুমাখা খাওয়ার কথা। দুধ মুড়ির সাথে কলা মিশিয়ে খেতে পারলে প্রোটিনের অভাব হয়না। কাবলি ছোলা বা রাজমা তরকারিতে দিলে তরকারির পুষ্টিগুণ অনেক বেড়ে যায়। সকালে ছোলা ও বাদাম ভেজানো ও খালি পেটে কাঁচা হলুদ নিম পাতা কিংবা থানকুনি পাতা খাওয়াও পেটের পক্ষে ভালো ।সবজি গোটা অবস্থায় নুন জল কিংবা খাবার সোডা দিয়ে বেশি পরিমাণে জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে ।এতে সবজিতে যে কীটনাশক থাকে তা দূর হয়।
বিজ্ঞান মঞ্চের কলকাতা জেলার কর্মী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ ইমিউনিটি বাড়াতে ছুটছেন ওষুধের দোকানে। তার কোন দরকার নেই ।ঘরেই রয়েছে ইমিউনিটি বাড়ানোর উপাদান।”
বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের বক্তব্য,” করোনাকালে এই সু-অভ্যাস গুলি আয়ত্ত করতে পারলে ভবিষ্যতেও এই নিয়ম আমাদের সুস্থ জীবনযাপনের সহায়তা করবে।”