শান্তনু বোস, নিজস্ব প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ:১৪ই মে:– এই করোনা পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটা শব্দের সাথে আমরা বেশ অভ্যস্ত হয়ে গেছি। কোয়ারান্টাইন, আইসোলেশন, লকডাউন, অক্সিজেন স্যাচুরেশন ইত্যাদি। আমার মনে হয় এর মধ্যে সেরা শব্দ যেটা উঠে এলো সেটা হল “রেড ভলেন্টিয়ার্স”। শব্দটা কখনোই অরাজনৈতিক শব্দ নয়। এই রেড ভলেন্টিয়ার্স তৈরি হয়েছে অবশ্যই একটা রাজনৈতিক দর্শন থেকে। মানুষের জন্য রাজনীতি, না-কি রাজনীতির জন্যে মানুষ, এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে যারা মানুষের জন্যে রাজনীতির পক্ষে তারাই রেড ভলেন্টিয়ার্স।
নির্বাচনের প্রাক্কালে ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া মানুষের সেবা করার যে মুখ গুলোকে কুলোর বাতাস দিচ্ছিল, নির্বাচন পরবর্তী কালে তাদের আর দেখা নেই। কাজ শেষ,তাই মিডিয়ারও আর কোনো দায় নেই তাদের দেখানোর। মানুষের জন্য কাজ করার দায় এবং দায়িত্ব যদি কারোর থেকে থাকে তাহলে সেটা নির্বাচনে শূন্য পাওয়া মানুষ গুলোর। নির্বাচনের শেষ দু’টো পর্ব সমাপ্তির আগেই করোনা সংক্রমন তার জাল বিস্তার করেছিল। নির্বাচনের ফল প্রকাশের আগেই নব যৌবনের দূতেরা তাদের যৌবন এবং কৈশোরে স্বাভাবিক উদ্দামতা থেকেই তৈরি করে ফেলেছিল রেড ভলেন্টিয়ার্স। সামাজিক দায়বদ্ধতা, বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার অদম্য জেদ আর সেই সাথে বৈজ্ঞানিক সমাজবাদের দর্শন এই ছেলেমেয়ে গুলোর চলার পাথেয়। নির্বাচনের ফলাফল এদের শিবিরের ভয়াবহ বিপর্যয়। হতাশা, রাগ, দুঃখ নিয়ে যে অনুভূতি তৈরি হয়, সেই অনুভূতি গুলো যদি এদের নিয়ন্ত্রণ করতো তাহলে হয়তো এরা ঘরের বাইরে পা রাখতো না। কিন্তু এদের নিয়ন্ত্রণ করে তো সেই দর্শন, যে দর্শনে হারানোর কিছু নেই বরং জয় করার জন্যে আছে গোটা দুনিয়া।
রবীন্দ্রনাথের পুরাতন ভৃত্য কেষ্টা, তার মনিবকে বসন্ত রোগের থেকে বাঁচিয়ে তুলেছিল। শেষমেশ কেষ্টার পরিণতিটা কিন্তু সকলেরই জানা। না, এদের ভাতা বা অনুদান দেওয়ার চেষ্টা না করাই ভালো। কারণ এরা সাময়িক রিলিফ নিয়ে মেরুদণ্ড বন্দক দিয়ে জীবন কাটতে চায় না। এরা অধিকার বুঝে নেওয়ার শিক্ষায় শিক্ষিত।
দেশ এবং রাজ্যের সরকার বাহাদুরের কাছে আমি দাবি জানাচ্ছি এই রেড ভলেন্টিয়ার্স নামক যৌবনের স্পর্ধাকে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে এদের “কোভিড যোদ্ধা” ঘোষণা করা হোক। সেই সাথে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।