সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ১২ আগষ্ট: টু মিনিটস নুডুলস এর মতো। কাজটা করতে বেশী সময় লাগলো না। সামান্য কিছু আলোচনা নিজেদের মধ্যে – ব্যস হয়ে গেল। মিথ্যের জাল বুনে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করে ফেললেন অমিত শাহরা। এটা করতে প্রতি মুহুর্তে মিথ্যার জাল বুনে বুনে জমি তৈরী করেছে। পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছে কেন্দ্রীয় সরাষ্ট্র মন্ত্রক।
পুরো কাজটা হিসাব করে করা হয়েছে। আর সব শেষে ১৪৪ ধারা – কারফিউ – বন্দুকের নল – যোগাযোগ ছিন্ন এবং একদিন মিথ্যার জাল ছিঁড়ে আসল কথার আত্মপ্রকাশ। একই ভাবে নোট বাতিলের সময় আগে থেকে পুরনো নোট চালানোর ব্যাবস্থা করে নিয়েছিল বিজেপি সরকার।
এই কাশ্মীর নিয়ে দুরভিসন্ধিটা চালু করেছিল অমরনাথ যাত্রী দের যাত্রা বাতিল করে। আচমকা তাদের বলা হয় বাড়ী চলে যান। এই যাত্রা শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৫ ই আগস্ট। ২রা আগস্ট সেনাবাহিনীর ঘোষনা অমরনাথের যাত্রাপথে উদ্ধার হয়েছে পাকিস্তানের ল্যান্ডমাইন। যারা এর আগে অমরনাথ গেছেন – যাদের এই পথ চেনা তাদের বেশ অবাক লেগেছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী বলছে – তাদের উপর অগাধ আস্থা- বিশ্বাস সবার।
আর এর পরই নির্দেশিকা জারী হল “গোয়েন্দা সুত্রে সন্ত্রাসবাদী হামলার খবর পেয়ে উপত্যকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পর্যটকদের অমরনাথ যাত্রা স্থগিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু যখন চরম সন্ত্রাসবাদীদের ঘেরাটোপ ছিল কাশ্মীরে তখনও কি অমরনাথ যাত্রা বাতিল হয়েছিল? এখন নাকি অবস্থা এতটাই খারাপ তা সামাল দেওয়ার জন্য “অসামান্য” এই পদক্ষেপ নিতে হবে।
সেনাবাহিনীর কমান্ডার সাংবাদিকদের সাথে বৈঠক করে জানালেন অমরনাথের পথে যে ল্যান্ডমাইন পাওয়া গেছে তাতে নাকি পাকিস্তানের অস্ত্র কারখানার ছাপ আছে। যাত্রীদের উপর হামলা চালাবে বলে জানালেন সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি নাকি এতটাই ভয়ঙ্কর যে সঙ্গে সঙ্গে ৯৫ হাজার জওয়ান মোতায়েন হয়ে গেল। আধাসেনাদের ছুটি বাতিল করে ডেকে নেওয়া হল।
সবচাইতে আশ্চর্য কথা জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল পর্যন্ত কিছু জানতেন না। সত্যপাল মালিক, জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল আগের দিন পর্যন্ত বলে গেছেন সংবিধানের কিছু রদবদল হচ্ছে না। তার সাথে দিল্লীর কথা হয়েছে। আর তার পরের দিনই ঝুলি থেকে বেড়াল বার করলেন অমিত শাহ।
৩৭০ ধারা বাতিল হল। কিন্তু এত কিছুর পেছনে কারণটা কি? তার মানে সন্ত্রাসবাদী হামলার কথাটা কি পুরোটাই মিথ্যা? ৩৭০ ধারা বাতিলের জন্য উপত্যকা খালি করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। সেনাবাহিনীকে দাঁড় করিয়ে রেখে মোদী-অমিত শাহ চুড়ান্ত মিথ্যা কথাটা বললেন? তার মানে সেনাবাহিনী দিয়ে জম্মু- কাশ্মীরের জনগনের উপর যে দমনপীড়ন চলে সেগুলি তাহলে সত্যি।
মানবধিকার কমিশন প্রায়ই অভিযোগ করে সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে নিরাপত্তা বাহিনী বর্বরোচিত আক্রমন চালায়, সেগুলি তাহলে সত্যি? হাজার হাজার যুবক নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে তার পিছনে রহস্য টা কি? প্রশ্ন বড় জোরদার হয়ে উঠছে এতদিন সেনাবাহিনী যত কিছু বলেছে বা করেছে তার সত্যতা নিয়ে। শুধুমাত্র একটা কাশ্মীর নগ্ন করে দিয়েছে মিথ্যার সওদাগরদের। প্রশ্ন উঠেছে দায়িত্বশীল ও ভরসাযোগ্য বলে যারা পরিচিত তাদের দায়বদ্ধতা নিয়ে।