দেশ

গুজরাটের অর্থনীতিতে গোমূত্র ক্রমেই এক লাভজনক পণ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে


মৈত্রেয়ী দাস: চিন্তন নিউজ: ৩ এপ্রিল: – গুজরাটে বর্তমানে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার গোমূত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগের চেয়ারম্যান বল্লভ কাঠিরিয়া ই টি(E T)কে জানিয়েছেন যে, গুজরাটে গোমূত্র এবং গোমূত্রের ভাণ্ডার বা ঘনীভূত গোমূত্রের ব্যবহার সে রাজ্যে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেয়ে একদিনে প্রায় ৬০০০ লিটার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি ঘটেছে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর।

গুজরাটের অর্থনীতিতে গোমূত্র ক্রমেই এক লাভজনক পণ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে যা করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে বলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দাবী। তাঁর মতে দীর্ঘমেয়াদী ব্যাধির ক্ষেত্রে গোমূত্রকে এক মহৌষধ হিসেবে গো-উদ্যোক্তারা প্রচার করছে। গত মাসে দিল্লীর একদল লোক এই বিষয়টিকে প্রচারের আলোয় আনার জন্য একটি ‘গোমূত্র পান পার্টি’-র আয়োজন করেছিলেন।

কাথেরিয়া আরো বলেন, গুজরাটে গোমূত্র কেবলমাত্র পানের জন্য নয়,”দূষিত জীবাণু” প্রতিরোধে শরীরের স্প্রে তৈরীতেও ব্যবহৃত হচ্ছে। বলা হচ্ছে, অনেকে যেমন অসুখ প্রতিরোধে তাজা গোমূত্র গ্রহণ করে, তেমনি গারগলিং এবং মদ্যপানের অনুসঙ্গ হিসেবে গোমূত্র ভাণ্ডারের উল্লেখযোগ্য চাহিদা রয়েছে।
অঙ্কোলজি সার্জেন কাঠিরিয়া বলছেন “গোমূত্র হজমশক্তির উন্নতি করে, লিম্ফোসাইটগুলি শক্তিশালী করে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলিতে পৌঁছায়। গোমূত্র ব্যাকটিরিয়াকে নাশ করে এবং করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধের লড়াইকে শক্তিশালী করবে।” তাঁর মতে, ১ লিটার গোমূত্র থেকে প্রায় ৭০০ মিলি লিটার “গোমূত্র ভাণ্ডার” বা ঘনীভূত গোমূত্র প্রস্তুত হয়। তৈরী হয় গোমূত্রভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার।

আহমেদাবাদে একটি গোশালা পরিচালনাকারী রাজু প্যাটেল বলে এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আগে প্রতি মাসের শুরুতে ৮০ থেকে ১০০ বোতল গোমূত্র ভাণ্ডারের চাহিদা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে ৪২৫ বোতলে দাঁড়িয়েছে। রাজু প্যাটেল আরো মনে করেন, তুলসী, আদা এবং অন্যান্য ভেষজের সাথে গোমূত্রের শক্তিশালী সংমিশ্রণ কাশি-সর্দির বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং এর চাহিদা এতই তুঙ্গে যে তিনি আর এই সংমিশ্রণটির অর্ডার নিতে অক্ষম।

পাটান জেলার শামির নামে এক গো-কর্মী যিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বটে, সেই লভশঙ্কর রাজগোড় বলেছেন, ২০০৭ সালে তিনি প্রথম গোমূত্রের উপর ভিত্তি করে বডি স্প্রে এবং বতর্মানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে গোমূত্র দিয়ে স্যানিটাইজার তৈরী করেছেন। তাঁর দাবী, এই পণ্য সরবরাহ সময়সাপেক্ষ কাজ এবং লকডাউনের কারণে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। আহমেদাবাদ,পাটান ও মেহসানা জেলার চাহিদা মেটাতে তিনি প্রতিদিন প্রায় ৫০ বোতল স্যানিটাইজার উৎপাদন করেন।

অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার কান্তিলাল প্যাটেল ই টি(E T) কে জানিয়েছেন, গোমূত্র ব্যবহারে তিনি উপকৃত। তাঁর স্ত্রী ক্যান্সার রোগী এবং প্রতি সকালে টাটকা গোমূত্র সেবনে তিনি গভীর লাভবান হয়েছেন। শ্রীযুক্ত প্যাটেল বলেছেন, “গোমূত্র অবশ্যই ভাইরাস উপশমকারী এবং প্রচুর সম্ভাবনাময় একটি দ্রব্য।” যদিও মেডিক্যাল সাইন্স বা মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কি বলছেন তা এখনো জানা যায় নি।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।