কলমে কৃষ্ণা সাবুই:-চিন্তন নিউজ:- ১৫/১১/২০২৪:– কারারুদ্ধ কথাটা শুনলেই সচেতন মনে একটু সমবেদনা অনুভুত হয় যদি তিনি একজন লেখক, কবি সাহিত্যিক দার্শনিক হন। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হল তাঁর নিজের মত করে কিছু বলা। সেটা গনতান্ত্রিক অধিকার। সমাজে ঘটে যাওয়া অন্যায়,দুর্নীতি এগুলো সবাই মেনে নিতে পারেনা।কেউ মুখে বলেন কারও কলম প্রতিবাদ করে ওঠে।তখনই রাষ্ট্রের কোপে পড়তে হয়। এমনকি কারারুদ্ধ হতে হয়।স্বাভাবিক চিন্তা বলে – এটা অন্যায়।
এই প্রতিবাদী কন্ঠস্বর , লেখা কে মান্যতা দেওয়া বা সমর্থন করার জন্য ১৫.ই নভেম্বর দিনটি কে আন্তর্জাতিক স্তরে কারারুদ্ধ লেখক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন, শাসক তাঁর কলমকে স্তব্ধ করতেই কারারুদ্ধ করে। মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, সঙ্গে নাগরিক জীবনের সমস্ত অধিকারেও হস্তক্ষেপ হয়।
সচেতন মানুষ মেনে নিতে পারেনা।তাই প্রতিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে ওঠে।
ইতিহাসের থেকেই জানা যায় –
বহু গুনী মানুষ যুগে যুগে এই অন্যায়ের বলি হয়েছেন।হয়ত সারা জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন কারাগারের অন্তরালে।
দার্শনিক সক্রেটিস মৃত্যুদন্ড মাথা পেতে নিয়েও নিজ সিদ্ধান্ত থেকে ১ ইঞ্চি সরেন নি। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর মত প্রতিষ্ঠা হয়েছে। হোমারের কালজয়ী সৃষ্টি ‘ওডিসী’র পঠন নিষিদ্ধ ছিল। দার্শনিক কনফুসিয়াসের মতবাদ চীন দেশের শাসক মেনে নেয়নি।
আমাদের দেশের ক্ষেত্রে দেখি_সাহিত্যিক মুরলী ধর বসু, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় পরাধীন ভারতবর্ষে জেলে বসে প্রচুর লিখেছেন। কবিগুরুর লেখা কোপে পড়লেও তিনি কারারুদ্ধ হননি।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর তীক্ষ্ম লেখনীতে ইংরেজ শাসকের রোষানলে পড়েছেন।তাঁর এই লেখা শাসক ভয় পেত।অত্যাচারে জর্জরিত হয়েও লিখেছেন ভারতবর্ষ কেন ইংরেজ শাসকের শাসন মানবে? ভারত ছাড়তে হবে – ভাবা যায়?
লক্ষ্য করার বিষয়, রাষ্ট্রবিরোধী কোন লেখা মানেই তাকে দেশবিরোধী তকমা দিয়ে কারাগারে পাঠান যায়।
আবহমান কাল থেকেই চলে আসছে এই জিনিস। দেখার বিষয়, করারুদ্ধ থেকেও লেখনী থামানো যায় নি। হয়ত জীবনের শেষে অশক্ত শরীরে মুক্তির আলো দেখেছেন। এই লড়াই কে শ্রদ্ধা ও সমর্থন জানায় চিন্তন।দিনটিকে সম্মানের সাথে স্মরন করার অঙ্গীকার হোক আজকের দিনে।